যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনার ভ্যাকসিন নিরাপদ ও কার্যকর। গবেষকদের দাবি, এই ভ্যাকসিন করোনা সংক্রমণ ছড়ানো কমিয়ে আনাতে পারে এবং মৃত্যুও কমিয়ে আনতে পারে।
চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট নন, এমন বিজ্ঞানীদের একটি দল ভ্যাকসটি মানবদেহে পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করেছেন। তাঁরা ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর চালানো পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পর্যালোচনা করেছেন। এই স্বেচ্ছাসেবকদের বেশির ভাগেরই বয়স ৫৫ বছরের কম। তবে পরীক্ষায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি বয়স্কদের ক্ষেত্রেও ভাল ফল দিয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৩৬৭ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ভ্যাকসিনটির প্রথম ডোজ অর্ধেক মাত্রায় এবং দ্বিতীয় ডোজ পূর্ণ মাত্রায় প্রয়োগ করা হয়। এরপর দেখা গেছে, তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। স্বেচ্ছাসেবীদের মোট সংখ্যার তুলনায় দেড় ডোজ পাওয়া এই স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় ভ্যাকসিনের মাত্রার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো কঠিন হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া ওই ১ হাজার ৩৬৭ জন স্বেচ্ছাসেবীর কেউই ৫৫ বছরের বেশি বয়সী নন।
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্বের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের এটিই প্রথম পিয়ার-রিভিউড বিশ্লেষণ। বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিনের বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিজেদের মধ্যে তথ্য বিনিময় করছেন। তাদের প্রত্যাশা, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের অনুমোদন পাবে।
যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে অক্সফোর্ডের টিকাটি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের আবেদন করা হয়েছে। তবে টিকাটি নিয়ে এখনো কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, টিকাটি কত ডোজ প্রয়োগ করা হবে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাসকেল সোরিয়ট বলেছেন, পরীক্ষার এই ফলাফল দেখাচ্ছে যে টিকাটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর। এটি নিরাপদ এবং সহনশীলও।