fbpx

‘আইলো রে নয়া দামান’ নিয়ে বিভ্রাট

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সিলেট অঞ্চলের একটি গান ‘আইলো রে নয়া দামান’ নিয়ে ফেসবুকে তুমুল আলোচনা হচ্ছে কিছুদিন ধরে। বিশেষ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনজন চিকিৎসকের এই গানের সাথে নাচের পরই ভিডিওটি  ভাইরাল হয়। সেইসাথে এই গানের মূল নিয়েও টান পড়ে। অনেকের প্রশ্ন এই গান কে লিখেছেন অথবা সুর করেছেন কে? এরই ভেতর সিলেটের দুই শিল্পী মুজা এবং তসিবার কন্ঠে গানটি মানুষের মুখে মুখে ফিরছে।

এই গান নিয়ে যখন জোর আলোচনা চলছে ঠিক তখনই গানটির গীতিকার এবং সুরকার হিসেবে লোককবি দিব্যময়ী দাশের নাম উল্লেখ করছেন তার পরিবার।

যেহেতু গানের কোথাও সুরকার বা গীতিকারের নাম উল্লেখ নেই, তাই স্বাভাবিকভাবেই সবার ভেতর জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছে সুরকার এবং গীতিকার সম্পর্কে। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে সংগীতশিল্পী কাবেরী দাশ এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, তার ঠাকুরমা লোককবি দিব্যময়ী দাশ ১৯৬৫ সালের দিকে গানটি রচনা করেন। রচনার পর গ্রামের বিভিন্ন আসরে তা পরিবেশন করা হত। আর সেভাবেই সঙ্গী ও শ্রোতাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছিল গানটি।

লোকশিল্পী দিব্যময়ী দাশ হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দুই লোকসংগীতশিল্পী রাম কানাই দাশ ও সুষমা দাশের মা। এছাড়াও তার বড় পরিচয় তিনি লোককবি রসিকলাল দাশের স্ত্রী।

জীবিত থাকতে রামকানাই দাশ বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ গানের গীতিকার ও সুরকার হিসেবে মা দিব্যময়ীর নাম উল্লেখ করে গেছেন।

লোকসংগীত গবেষক সুমন কুমার দাশ রচিত ‘রাম কানাই দাশের নন্দনভূবন’ বইয়েও রাম কানাই দাশের বয়ানে গানটির গীতিকার হিসেবে দিব্যময়ী দাশের নাম উঠে এসেছে।

বইয়ে রাম কানাই দাশ বলছেন, ‘আইলা রে নয়া জামাই’ ছাড়াও ‘তোরা শুনছনি গো রাই/কাইল যে আইছে নুয়া জামাই/বলদ নাকি গাই’ শিরোনামে আরেকটি বিয়ের গানও রচনা করেছেন তার মা।

প্রয়াত শিল্পী রাম কানাই দাশের মেয়ে কাবেরী দাশ এ প্রসঙ্গে বলেন ‘আমরা তখন সিলেটের টিলাগড়ে থাকতাম।  শিল্পী ইয়ারুন্নেসা খানম মায়ের কাছে গান শিখতে আসতেন। ১৯৭২-৭৩ সালের দিকে গানটি মায়ের কাছ থেকে নিয়ে প্রথমবারের মতো সিলেট বেতারে পরিবেশন করেছিলেন ইয়ারুন্নেসা।’

সিলেট বেতারে পরিবেশনের সময় গানের ‘বাজায় বাঁশি জয় রাধা বলিয়া’ থেকে বেতার কর্তৃপক্ষ ‘রাধা’ শব্দটি ফেলে দিয়েছিলে বলে জানান কাবেরী দাশ। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি শব্দ ফেলে দেওয়া হয়েছিল এমনটি বাবার মুখে শুনেছিলেন বলে জানান তিনি।

কাবেরী দাশ দাবি করেন, দিব্যময়ীর লেখা ‘নয়া জামাই’ থেকেই বিভিন্ন সময়ে তা বদলে তা ‘নয়া দামান’ হয়েছে।

দিব্যময়ীর লেখা ও তার ভণিতা পদসহ মূল গানটিই ২০০৫ সালের বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত লোকগানের একক অ্যালবাম ‘অসময়ে ধরলাম পাড়ি’ তে রেকর্ড করেন তার ছেলে রাম কানাই দাশ। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি গানের গীতিকার হিসেবে মায়ের নাম বলে এলেও নিজের অ্যালবামে তা উল্লেখ করেননি।

উক্ত অ্যালবামে ‘আইলো রে নুয়া জামাই’ গানের গীতিকার ও সুরকার হিসেবে কারও নাম নেই জানিয়ে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা জাহিদুল হক দিপু বলেন, অ্যালবামে ও ইউটিউবে চ্যানেলে গানটিকে ‘সংগৃহীত’ বলেই  উল্লেখ করা হয়েছিল।

Advertisement
Share.

Leave A Reply