আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তালেবান বাহিনী আসার পর দেশটির খেলাধুলা নিয়ে অনেকেই আশংকায় ছিলেন। সাঁতার থেকে ফুটবল, ঘোড়দৌড়সহ মোট ৪০০ রকম খেলাধুলা দেশটিতে অনুমোদন করা হবে বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের নতুন ক্রীড়াপ্রধান। তবে এগুলোর মধ্যে নারীরা কোনো খেলায় অংশ নিতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
আফগানিস্তানের খেলাধুলা ও শারীরিক শিক্ষার ডিরেক্টর জেনারেল হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত বশির আহমেদ রুস্তমজি গতকাল মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘মেয়েদের খেলার ব্যাপারে আমাকে দয়া করে কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না।’
রুস্তমজি নিজে আফগানিস্তানের কুংফু ও কুস্তি চ্যাম্পিয়ন থাকলেও মেয়েদের খেলা নিয়ে চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করেছেন। এ ব্যাপারে যাবতীয় প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন তিনি।
Mr. Paine!
The Afghan National Cricket Team has the right to play not only in this World Cup but in all ICC organized events of ICC.
Cricket is now the No#1 Sport in Afghanistan and is being followed by nearly 30 million Afghans.(Sports should be separated from politics) pic.twitter.com/oHjeeX7gKi
— ?????? ?????? (@DawlatZadranDK) September 11, 2021
আফগানিস্তানে ছেলেদের খেলাধুলা কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। খেলাধুলার স্টেডিয়ামগুলো মানুষ হত্যার কাজে ব্যবহার করা হতো। তালেবান সরকারের অধীনে ক্রীড়া বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া আহমেদ রুস্তমজি বলেন, ‘ছেলেদের খেলার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। তারা যে কোনো খেলায় অংশ নিতে পারে। আমরা কোনো খেলাকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করব না। যদি না সেটা শরিয়া আইনের বিরোধী হয়। তাই আমরা ৪০০ ধরনের খেলায় অনুমোদন দিয়েছি।’
আফগানিস্তানে নারীদের খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার প্রসঙ্গে তালেবানদের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে নির্দেশ আসার অপেক্ষায় রয়েছেন রুস্তমজি। তার এক উপদেষ্টা জানালেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে চলছে, আমরা সেভাবে ভাবতে পারি। নারীরা হয়তো খেলায় অংশ নেবে, কিন্তু তা পুরুষদের থেকে আলাদাভাবে।’
তবে রুস্তমজি বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি। তালেবান বাহিনী ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারীরা লেখাপড়া করতে পারছেন ঠিকই, তবে ছেলেদের সাথে তাদের লেখাপড়ার সুযোগ নেই। পোশাকেও আনা হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ।
এখনো পর্যন্ত আফগানিস্তানে মেয়েরা কোনো খেলায় অংশ নিতে পারবেন কিনা, তা বলা যাচ্ছে না। গত সপ্তাহে তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের উপ-প্রধান আহমদুল্লাহ ওয়াসিক বলেছেন, ‘মেয়েদের জন্য তো খেলায় অংশ নেওয়াটা জরুরি কোনো বিষয় নয়। আর ক্রিকেট খেলতে হলে তাদের মুখ ও সারা শরীর ঢেকে রাখাও সম্ভব নয়।’
#BREAKING ??️
Cricket Australia has released a statement saying it would have "no alternative" to abandon its men's Test Match in Hobart if Afghanistan failed to support women's cricket. ????
? Full sport coverage: https://t.co/JkLWIrkEoj pic.twitter.com/YO95waf3I7
— ABC SPORT (@abcsport) September 9, 2021
তবে, মেয়েদের ক্রিকেট খেলা নিয়ে তালেবান শাসকগোষ্ঠীর ওপর এরইমধ্যে চাপ বাড়ছে। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিয়ম হলো, প্রতিটি দেশে যেখানে পুরুষরা ক্রিকেট খেলে, সেখানে ক্রিকেটে টেস্ট ম্যাচে অংশ নিতে অবশ্যই নারী জাতীয় দল থাকতে হবে। বেশ আগেই আফগানিস্তান ক্রিকেট টেস্ট মর্যাদা পেয়েছে।
আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) চেয়ারম্যান আজিজুল্লাহ ফজলি এসবিএস রেডিও পশতুকে জানান, নারীদের খেলায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বেশ আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘খুব দ্রুতই আমরা আপনাদের সুখবর দিতে পারব।’
তবে, রুস্তমজির কথায় তেমন আশার খবর মেলেনি। রুস্তমজি বলেন, ‘সিনিয়র নেতাদের মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। তারা নারীদের (খেলায় অংশগ্রহণ) অনুমোদন দিতে বললে, আমরা দেবো। তা না হলে দেবো না। আমরা তাদের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে প্রথম মেয়াদে তালেবান বাহিনী ক্ষমতায় থাকতে নারীদের খেলাধুলায় অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ ছিল।