গত ছয় মাসে টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক সেজে লাভজনক বিনিয়োগের কথা বলে ২০ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে। গত সোমবার তারা ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি-কেলেঙ্কারি সম্পর্কে সচেতন করতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। দ্য সিয়াটল টাইমসের এক প্রতিবেদন এমনটিই দাবি করছে।
এফটিসির অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার মানুষ নানাভাবে ডিজিটাল মুদ্রায় সব মিলিয়ে প্রায় আট কোটি ডলার খুইয়েছে। গেল বছরের তুলনায় এই প্রতারণার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১০০০ শতাংশ।
দুর্বৃত্তরা বিনিয়োগকারীদের বিটকয়েন এবং ডোজকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছে। কেননা ইলন মাস্ক এই ভার্চুয়াল মুদ্রাগুলো নিয়ে টুইটারে আলোচনা করায় ব্যাপারটি সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে।
এফটিসির মুখপাত্র দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে পাঠানো এক মেইলে বলেন, তাদের কাছে ছদ্মবেশীদের ফাঁদে পড়ার ১৩৩টি অভিযোগ এসেছে। অভিযোগকারীরা বলেছেন, ইউটিউবে তারা দেখেছেন, ইলন মাস্ক মানুষকে বিটকয়েন বিলিয়ে দিচ্ছেন।
অনেকে আবার ইলন মাস্কের টুইট মনে করেও ভুল করেছেন। কেননা এই টুইটগুলোয় বিনিয়োগকৃত বিটকয়েন তাৎক্ষণিকভাবে দ্বিগুণ করার কথা বলা ছিল।
গত ফেব্রুয়ারিতে টেসলাপ্রধান ইলন মাস্ক ১৫০ কোটি ডলারের বিটকয়েন কেনে। তিনি মার্চে ঘোষণা দেন, এখন থেকে ডিজিটাল মুদ্রায় টেসলার গাড়ি কেনা যাবে। এরপরই হু হু করে বাড়তে থাকে বিটকয়েনের দাম। সে সঙ্গে ডিজিটাল মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতাও বেড়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির আইন এবং ব্যবসায়ের অধ্যাপক জোসেফ এ গ্রান্ডফেস্ট এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ক্রিপ্টোকারেন্সির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারটি আমলে নিলে প্রতারণা যে বাড়ছে, তাতে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ ধরনের প্রতারণার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তিনি।
এফটিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ডেটিং ওয়েবসাইটেও মানুষ ক্রিপ্টোকারেন্সি-প্রতারণার শিকার হয়েছেন।২০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীরা ক্রিপ্টো-প্রতারণার শিকার বেশি হয়েছেন বলেও ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
গ্রান্ডফেস্ট বলেন, এই মুদ্রায় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা না থাকায় সে অর্থ ফিরিয়ে আনার আশা খুব কঠিন। পাশাপাশি প্রতারণাকারীদের শনাক্ত করা ও প্রায় অসম্ভব বলে জানান তিনি।