পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা দুর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে উঠার কারণ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের যোগসাজশ আছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)
১ জুন (মঙ্গলবার) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটাই জানান টিআইবি। সংস্থাটি মনে করছেন ইউজিসির সুনির্দিষ্ট সুপারিশ বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনীহার যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা দুর্নীতি-অনিয়মের যোগসাজশের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যা কিনা সামগ্রিকভাবে এটা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, জবাবদিহিতার অভাব ও বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই প্রতিফলন।
এসময় সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তা খুবই হতাশাব্যঞ্জক ও আত্মঘাতী বলেও জানান সংস্থাটি।
ওই বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ শিক্ষাদান, গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার পরিবর্তে একশ্রেণির সুবিধাভোগী দলদাস তথাকথিত শিক্ষকদের কারণে দলীয় লেজুড়বৃত্তি রাজনীতির স্বার্থ রক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় শিক্ষাগত যোগ্যতার বদলে রাজনৈতিক পরিচয়ের সম্পৃক্ততায় নিয়োগ দেয়া হয়। এমন অভিযোগ পাওয়া যায়, আর এই বিষয়টা সরাসরি নাকচ করে দেয়া যায়না বলেও দাবি করেন তিনি।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্যসহ প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে এমন সব ব্যক্তিকে পদায়ন ও নিয়োগ প্রদান করছেন, যারা উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ নয় বরং ক্ষমতাসীন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও দলীয় নেতাকর্মীদের সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তা বিধানে সচেষ্ট থাকেন।
তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অভিযুক্ত একজন উপাচার্যকেও যদি ন্যায়বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হতো, তাহলে পরবর্তী সময়ে অন্যান্য উপাচার্যরাও অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার সাহস করতেন না বলেও জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
কোনো উপাচার্যের বিরুদ্ধে ২৫টি আবার কারো বিরুদ্ধে ৪৫টি পর্যন্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পরও দুর্নীতি দমন কমিশন ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে, যা হতাশাব্যঞ্জক। শিক্ষা উপমন্ত্রী অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ দুদকের কাছে প্রেরণের যে কথা বলেছেন, সে অনুযায়ী ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান, রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে ও কোনো ধরনের চাপের কাছে নতি শিকার না করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে বলে টিআইবি প্রত্যাশা করছে।