কখনও তিনি মঞ্চ কাঁপানো নুরুলদীন, গ্যালিলিও আবার কখনও তিনিই টেলিভিশনে আসগর, ফরিদ মামা। স্ব স্ব অবস্থানে তিনি রেখেছেন নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর। একসময় মঞ্চে দাপিয়ে অভিনয় করেছেন আবার টেলিভিশনেও তিনি স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত ছিলেন।
বর্তমান তরুণ অভিনেতাদের কাছে তিনি এক বিস্ময়। তিনি আইডল যেকোনো অভিনেতার জন্য। তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেতা, নির্দেশক, লেখক, ফটোগ্রাফার।
১৯৭২ সালে ‘আরণ্যক’ নাট্যদলের হয়ে বরেণ্য অভিনেতা আলী যাকের এর মঞ্চ নাটকে অভিষেক ঘটে। প্রথম নাটক ছিল মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’। কেন্দ্রীয় ‘নেতা’ চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তিনি দর্শকনন্দিত হয়ে ওঠেন রাতারাতি। পরবর্তীতে তিনি যোগ দেন ‘নাগরিক’ নাট্যদলে।
‘নুরুলদীনের সারাজীবন’, বাকি ইতিহাস, ‘কেপেনিকের ক্যাপ্টেন’ সহ আরো বিখ্যাত সব নাটকে তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি দিয়েছেন নাট্য নির্দেশনা। ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রীহি’, ”কোথায়ো কেও নেই’ সহ বিভিন্ন জনপ্রিয় তেলিভিশন নাটকে ছিল তাঁর দীপ্ত পদচারণা। ‘নদীর নাম মধুমতি’, ‘লালসালু’ সিনেমাতে তাঁর অভিনয় এখনো সবার চোখে লেগে আছে।
তিনি বেশকিছু বই লিখেছেন। এছাড়াও পত্রিকাতে নিয়মিত কলাম লিখতেন। মৌলিক নাটক লেখার পাশাপাশি তিনি বেশকিছু বিদেশি ভাষার নাটকও অনুবাদ করেছেন। তিনি ছিলেন সখের ফটোগ্রাফার। ফটোগ্রাফি দক্ষতার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যের ‘রয়াল ফটোগ্রাফি সোসাইটি’ এর স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করেন।
বহুপ্রতিভার মিশেলে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব।
তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে। জাদুঘরের ট্রাস্টি হয়ে তিনি কাজ করেছে আমৃত্যু।
আলী যাকের ছিলেন এক অনুপ্রেরণার নাম। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণসহ বিভিন্ন মাধ্যমকে তিনি বিকশিত করেছেন আপন প্রতিভা দিয়ে। ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তিনি বেঁচে থাকবেন যুগ যুগ ধরে।