প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। করোনা ও লকডাউনে একের পর এক চাকরি হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। দেশে বেড়েছে নতুন গরিবের সংখ্যা। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের বিপরিতে সুলভ মূল্যে নিত্যপণ্যে কিনতে নিম্নবিত্তদের সাথে টিসিবির পণ্যের ক্রেতার লাইনে দাঁড়িয়েছেন মধ্যবিত্তরাও।
মোহাম্মদপুরে টিসিবির পণ্য কিনতে আসছেন মো. জাহিদ। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী, টানা লকডাউনের কারণে ব্যবসায় ধস নামায় প্রথমবারের মতো জাহিদও দাঁড়িয়েছেন এই লাইনে। তিনি মনে করতেন স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্যই এই পণ্য সরবরাহ করা হয়। অথচ করোনা পরিস্থিতি জাহিদকে বাধ্য করেছে এই লাইনে দাঁড়াতে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এবং ওএমএস -এর প্রতিটা ট্রাকে রয়েছে চাল, ডাল, চিনি, সয়াবিন তেল ও আটা আর এগুলো একেবারেই স্বাধ্যের মধ্যে। চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রি শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে সব সামগ্রী। দিয়ে কুলাতে পারছেন না ডিলাররা।
ডিলাররা বলছেন, চাহিদা থাকার কারণেই খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাচ্ছে সব পণ্য। আগের চেয়ে ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে যার কারণে পণ্য সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
এখন দৃশ্য এমন হয়েছে যে নিম্নবিত্তের চেয়ে মধ্যবিত্ত মানুষের সংখ্যাই বেশি টিসিবির লাইনে। শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যেই নয় চিকিৎসার জন্য ইনকামের একটা বড় অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে বলে সংসারে টানাপোড়নে আছেন অনেকেই তাই বাধ্য হয়েই এই লাইনে।
সুলতানার বাবা একজন পরিবহন চালক টানা লকডাউনের কারণে তাদেরও অবস্থা করুন কোনরকমে সংসার চলছে। তাই সুলতানা সকাল থেকেই এসে লাইনে দাঁড়িয়েছে টিসিবির। বাজারের তুলনায় কম দামে পণ্য কিনতে পারায় এই লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে তাদের।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনার কারণে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত ২৬ লাখের বেশি মানুষ বেকার হয়েছেন। এছাড়া কর্মজীবীদের আয় কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।