সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া করোনার পরিবর্তিত রূপ (স্ট্রেইন) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি কানাডা ও জাপানেও করোনার এই নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জার্মানি, স্পেন, বেলজিয়াম, সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্সে করোনার এই স্ট্রেইন ছড়িয়েছে।
এছাড়া ইউরোপের বাইরে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, লেবানন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং সর্বশেষ জাপান ও কানাডায় নতুন এই ধরনের করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে করোনার এই নতুন ধরন শনাক্ত হয় ১৪ ডিসেম্বর। নতুন এই স্ট্রেইন আগের স্ট্রেইনের তুলনায় দ্রুত ও বেশি ছড়ায় বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এদিকে বিশ্বে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়েছে।
করোনা সংক্রমণ সম্পর্কিত পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্বে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৭৩৩ জন। আর এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মারা গেছেন, ১৭ লাখ ৬৪ হাজার ৬২১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ কোটি ৬৯ লাখ ৮ হাজার ৮৫০ জন।
করোনার প্রভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে। দেশটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা, ১ কোটি ৯৪ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪৭ জন। আর মারা গেছেন ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯২১ জন। সেখানে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার ৫০১ জন।
অন্যদিকে বরাবরের মতোই সংক্রমণ তালিকার ২য় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ভারত। এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯২ জন। আর প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৫৯ জন।
দিন দিন ব্রাজিলের অবস্থাও সংকটপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তৃতীয় স্থানে থাকা দেশটিতে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৭৪ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৬ জন। আর এতে মারা গেছেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৮১৫ জন।
তালিকার চতুর্থ স্থানে রাশিয়া, পঞ্চম ফ্রান্স এবং ষষ্ঠ যুক্তরাজ্য। আর ইতালিকে পেছনে ফেলে তুরস্ক সপ্তম স্থানে চলে এসেছে। ইতালি এসেছে অষ্টম স্থানে। নবম স্থানে রয়েছে স্পেন এবং দশম স্থানে জার্মানি উঠে এসেছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ২৭তম।
দিন দিন মেক্সিকোতে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। দেশটিতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমাগত হারে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উমান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি দেশটিতে
করোনায় প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়। কিন্ত তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি।
চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর চীনের বাইরে ফিলিপাইনে গত ২ ফেব্রুয়ারি করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে।