fbpx

যে কলেজে পড়ানো হয় না গণিত

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে পা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শিক্ষাখাতে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে গেছে। তবে খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রতিষ্ঠার পর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখানে পড়ানো হয় না গণিত। গণিত বিষয়ের কোনো শিক্ষক না থাকায় বেহাল দশা এই কলেজের।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় পদায়ন না করায় কলেজের গণিত শিক্ষকের পদ শূন্যই রয়ে গেছে। ফলে কলেজে গণিত পড়ানোই হয় না। এ কারণে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাও আবশ্যিক বিষয় হিসেবে গণিত নেয় না।

শুধু গণিত বিভাগ নয়, খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, পরিসংখ্যান এবং ইতিহাস বিষয়েরও কোনো শিক্ষক নেই। তবে অন্য বিষয়ের শিক্ষকেরা মাঝেমধ্যে ওই সব বিষয় পড়ালেও গণিত কেউ পড়ান না। যার প্রভাব পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে। ২০১৮ সালে এইচএসসিতে পাসের হার ছিল ৫৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ শতাংশে।

কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা গণিত বিষয়ে আগ্রহী হলেও ক্লাস না হওয়ায় আবশ্যিক বিষয় হিসেবে রাখেনি। পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের পাশাপাশি তাদের চতুর্থ বিষয় হিসেবে জীববিজ্ঞান নিতে হচ্ছে। চতুর্থ বিষয় (ঐচ্ছিক) হিসেবে নিতে হয় উচ্চতর গণিত নেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের। ফলে বাইরের শিক্ষকের কাছে পড়ার সামর্থ্য অনেকেরই নেই।

শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে এই জেলায় একটি মাত্র মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৯ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে এখানকার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০।

প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই নানা সমস্যায় জর্জারিত এই কলেজ। শুরু থেকেই এই কলেজে শিক্ষক সংকট রয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকের জন্য ১৮ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ১৪ জন। গণিতসহ চারটি বিষয়ে শিক্ষক নেই। পদার্থবিজ্ঞান ও পৌরনীতির জন্য ২ জন শিক্ষক আছেন। কিন্ত তারা দুইজনই আছেন প্রশিক্ষণে। আর অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহ আলমগীর বলেন, শূন্য পদ পূরণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করা হলেও কোনো লাভ হয়নি। জেলার একমাত্র সরকারি মহিলা কলেজ হওয়ার পরেও চরম অবহেলার শিকার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্রনাথ বলেন, গণিত এমন বিষয়, যা অন্য বিভাগের কেউ পড়াতে পারেন না। শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা যথাযথ জ্ঞান অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এই বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নজর দেওয়া উচিত।

খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মধু মঙ্গল চাকমা বলেন, পাহাড়ে শিক্ষার মান উন্নয়নে নজর দেওয়া উচিত। মান উন্নয়ন করতে গেলে প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষক। কিন্তু জেলার একমাত্র মহিলা কলেজে গণিত বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষক না থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। তাই জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ করা দরকার।

Advertisement
Share.

Leave A Reply