fbpx

জামিন পেলেন মাহি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা ও মারপিটের মামলায় চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার(১৮ মার্চ) বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন এই আদেশ দেন। প্রেগনেন্সি ও সেলিব্রেটি বিবেচনায় আদালত এই আদেশ দেন বলে জানান মামলার আইনজীবী আনোয়ার শাহাদাত সরকার বলেন,তার মক্কেল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই মামলা হওয়ার পরও দেশে চলে এসেছেন।

মাহিয়া মাহিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। মাহি যেহেতু সন্তান সম্ভবা, তাই এই সময়ে এভাবে তাকে গ্রেফতার করার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন। বিশেষকরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে নিন্দার ঝড়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অভিনেতা-অভিনেত্রী, নির্মাতারাও মাহির পক্ষে কথা বলছেন, অন্তত মাহির অনাগত সন্তানের যেন কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর দিতে বলেছেন।

তবে মাহির এই ঘটনায় এফডিসির সংগঠনগুলোর ভূমিকা আসলে কি? এটা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন অনেকে। কারণ এখন পর্যন্ত এফডিসি থেকে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ, দেওয়া হয়নি লিখিত কোন অভিযোগ।

তবে বিবিএস বাংলার সাথে কথা বলেছেন নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান, কাজী হায়াৎ।

মাহির গ্রেফতার হওয়া বিষয়ে পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, ‌’মাহি কী এমন অপরাধ করে ফেলেছে যে একজন অন্তসত্ত্বা নারিকে এয়ারপোর্ট থেকেই গ্রেফতার করতে হবে? সে তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না কোথায়ও। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

পরিচালক সমিতি থেকে লিখিতভাবে কোন প্রতিবাদ করা হবে কিনা সে বিষয়ে এই নির্মাতা বলেন, ‘হ্যাঁ, পরিকল্পনা আছে আমাদের। সবার সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সময় হলেই আমরা আমাদের থেকে পদক্ষেপ নিবো।’

আরেক নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘মাহির পেছনে অনেক প্রযোজকের টাকা লগ্নি করা আছে। এটা মনে রাখা উচিত। আর একজন শিল্পীকে এভাবে গ্রেফতার করে শিল্পীদের অপমান করাই হচ্ছে। মাহি যদি অপরাধ করে থাকে তার বিচার হবে। তবে এভাবে এয়ারপোর্ট থেকেই গ্রেফতার করা উচিত হয়নি বলেই আমি মনে করি।’

মাহির গ্রেফতার বিষয়ে নিপুণকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

অন্যদিকে, এফডিসি ঘরানার বাইরের তিন নির্মাতা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা হলেন শিহাব শাহীন, রেদওয়ান রনি ও আশফাক নিপুণ। নিজ নিজ কাজের বাইরে তারা বরাবরই দেশ ও সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলেন। চুপ থাকেননি মাহি ইস্যুতেও।

শিহাব শাহীন তার সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘আরাভ খান (দুবাইয়ে পালিয়ে থাকা পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার আসামি) থেকে দৃষ্টি সরে যাবে সবার। মাহিকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানাই।’

অন্যদিকে আশফাক নিপুণ লিখেছেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেফতারে নিন্দা। অবিলম্বে এই আইন বাতিল করতে হবে।’

একই সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন রেদওয়ান রনিও। তার স্ট্যাটাস এরকম, ‘মাহিয়া মাহিকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানাই। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’

জামিন পেলেন মাহি

মাহিয়া মাহির গ্রেফতারের ঘটনায় নির্মাতা ও শিল্পীরা জানিয়েছেন প্রতিবাদ। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেত্রী জয়া আহসানও জানিয়েছেন প্রতিবাদ। তিনি তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘অভিনেত্রী মাহিয়া মাহীকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রেপ্তার করা হয়েছে। মাত্রই খবরে পড়লাম, পুলিশ তাকে রিমান্ডে আনার আবেদন করলেও আদালত তা মঞ্জুর করেননি। মাহি জনপ্রিয় অভিনেত্রী, কিন্তু দেশের সব নাগরিকের মতো তিনিও আইনের অধীন। তবে এই কথাটা বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার, তিনি এখন মাসের নয় মাসের অন্তঃসত্তা। তাঁর অভিযোগের তদন্ত চলুক, কিন্তু একজন গর্ভধারিণী মায়ের এবং তার সন্তানের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। রিমান্ড মঞ্জুর না করার জন্য বিজ্ঞ আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশের কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ করব, মা আর অনাগত শিশুর যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে যেন সংবেদনশীল থাকবেন।’

অভিনেত্রী পরীমণি প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘এইটা কোনো কথা না ভাই। চুপ করে থাকতে থাকতে কখন যে বোবা হয়ে যাবো আমরা। দেখছেন মাহীর দিকে। বুক কাঁপলো না আপনাদের! একজন অন্তঃসত্ত্বার এই শারীরিক ও মানসিক ধকলের দায়ভার কে নিচ্ছে তাহলে! আইনের এই খেলা বন্ধ হোক। মাহিকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।’

এছাড়াও যার যার মত করে সাধারণ মানুষও মাহির পক্ষে কথা বলছেন। অনেকে আবার মেতে উঠেছেন মাহির সমালোচনায়।

উল্লেখ্য, ফেসবুক লাইভে মানহানিকর তথ্য প্রচার করে আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানায় মামলাটি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি রকিব সরকার এবং ২য় আসামি মাহিয়া মাহি।

জিএমপির কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকার হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা, বানোয়াটা, আক্রমণাত্মক, কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর তথ্য প্রচার করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপরাধ করেছেন। বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রোকন মিয়া তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন।

১৭ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি অভিযোগ করেন, তার স্বামী গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা রাকিব সরকারের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে।

মাহিয়া মাহি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে আমাদের গাড়ির শোরুম দখল করে দিচ্ছে ইসমাইল ওরফে লাদেনকে।

 

Advertisement
Share.

Leave A Reply