গত ৬ ডিসেম্বরের ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর প্রভাব পড়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। একটানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে অসংখ্যা ফসলের জমি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক।
যেসব জেলার কৃষকেরা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে তা হলো- ঢাকার ধামরাই,নোয়াখালীর সুবর্ণচর, খুলনার ডুমুরিয়া, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, ভোলা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর।
বৃষ্টিতে দেশের ৩২ জেলার লাখো কৃষকের ক্ষেতের ফসল আক্রান্ত হয়েছে। তবে গত চার দিনেও ক্ষতির তথ্য চূড়ান্ত করতে পারেনি কৃষি মন্ত্রণালয়।
এই জেলাগুলোর মধ্যে ৬১ হাজার ৭৫২ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে বরিশাল বিভাগে। এছাড়া দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ করে উপকূলীয় ও মধ্যাঞ্চলে ভেসে গেছে ঘের ও পুকুরের মাছ, শুঁটকির মহাল। এদিকে খুলনায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল। শুধু তাই নয় শাকবাড়িয়া নদীর পানির তোড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের দুটি গ্রামের মানুষ এখনও পানিবন্দি। চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে প্রায় ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
এবার অগ্রহায়ণে বৃষ্টির কারণে কৃষির বড় ক্ষতির কারণে কৃষক বড় সংকটে পড়বেন। পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে বলে মনে করছেন কৃষি গবেষক রেজাউল করিম সিদ্দিক। তিনি বলেন, এ অবস্থায় দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও শস্যের সঠিক পরিমাণ নির্ণয় করে সহজ শর্তে ঋণ, সুদ মওকুফ, বীজ, সার ও উপকরণ সহায়তা দিয়ে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে। দ্রুত এ কাজগুলো করতে হবে, কারণ কৃষক পুনরায় চাষ করতে দেরি করলে পরের ফসলগুলো দেরি হবে।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ৩২ জেলায় ২৫ লাখ ২০ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ হয়েছে। বর্তমানে এসব জেলায় দায়মান জমির পরিমাণ ১৫ লাখ ১২ হাজার ৬১১ হেক্টর। আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯১ হেক্টর। আক্রান্ত হয়েছে ২২ ধরনের ফসল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আলু, পেঁয়াজ ও খেসারির ডালের। এগুলো একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। ৫০ শতাংশ শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে। আমন ধান ৬৫ শতাংশ কাটা হয়েছে। বাকি ৩৫ শতাংশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।