fbpx

চট্টগ্রামের ৪১ ওয়ার্ডে ওয়াসা ফায়ার হাইড্রেন্ট বসাচ্ছে

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিসকে সহজে পানি পাওয়ার সুবিধা দিতে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৭৩ টি ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের কাজ করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। নগরে ওয়াসার পানির সরবরাহ পর্যাপ্ত হওয়ায় এবং জরুরি মুহূর্তের প্রয়োজন বিবেচনায় ওয়াসা এ উদ্যোগ নিয়েছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাকৃতিক পানির উৎস বিশেষ করে পুকুর ক্রমাগতভাবে কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নগরীর কোথাও আগুন লাগলে মারাত্মক পানির সংকটে পড়ে অগ্নিনির্বাপক দল। পানির পর্যাপ্ত সরবরাহের অভাবে অনেক সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ সহায়-সম্বল, বাড়িঘর হারানোর পাশাপাশি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। বিষয়টি চট্টগ্রাম ওয়াসা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করে আসছিল। তাই প্রথম সুযোগেই ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসকে পানির উৎস পেতে সুবিধা করে দিচ্ছে। নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে মোট ১৭৩ টি ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করা হবে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘নগরীতে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের লক্ষ্যে চিটাগং ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড স্যানিটেশন প্রজেক্টের ফিজিবিলিটি স্টাডির সময় জাপানের কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান ‘এনজিএস’ ফায়ার হাইড্রেন্টসহ একটি আধুনিক ও পূর্ণাঙ্গ নগরীর জন্য কিছু অপরিহার্য সুবিধার প্রস্তাবনা তুলে ধরে। ফিজিবিলিটি স্টাডি’তে দেয়া নকশায় ফায়ার হাইড্রেন্টের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়। আমরা নক্শাসহ আমাদের প্রস্তাবনা ফায়ার সার্ভিসের কাছে পেশ করি। ফায়ার সার্ভিস প্রথমে একটু সময় নিলেও পরে আগ্রহ প্রকাশ করে। এরপর দুই প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে বৈঠকে বসে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের জন্য সুবিধাজনক স্থানে ১৭৩ টি ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। এ ক্ষেত্রে বসতি ও পানির প্রাপ্যতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘ইতিমধ্যে ৫৪ টি ফায়ার হাইডেন্ট স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস চারটিতে ট্রায়াল দিয়েছে। সবক’টিতেই পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ওয়াসা আশা করে, সব ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের কাজ শেষ হলে অগ্নিদুর্ঘটনাকালে নির্বাপক দলকে আর পানির জন্য ছুটোছুটি করতে হবে না। তাদের হাতে থাকা ম্যাপেই তারা দ্রুত পানির উৎস খুঁজে পাবে।’

প্রধান প্রকৌশলী জানান, ‘এ ১৭৩ টি ফায়ার হাইড্রেন্ট আমাদের দু’টি প্রকল্পের মধ্যেই অন্তর্ভূক্ত। এর মধ্যে চিটাগং ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড স্যানিটেশন প্রজেক্টের মধ্যে বসবে ২৯ টি ফায়ার হাইড্রেন্ট। বাকী ১৪৪ টি বসানো হবে কর্ণফুলী ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট ফেজ-২ এর আওতায়। ফলে নগরীতে অগ্নিনির্বাপনের যুগোপযোগী একটি অবকাঠামো গড়ে দিতে ওয়াসাকে বাড়তি কোনো অর্থই খরচ করতে হচ্ছে না।’

ওয়াসা’র ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ‘এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। আমি ওয়াসা’কে এ প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য সাধুবাদ জানাই। পৃথিবীর সব উন্নত শহরেই এ ব্যবস্থা আছে।’

আশিক ইমরান বলেন, ‘হাইড্রেন্ট এলাকায় সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে পুকুর, জলাশয় বা পানির অন্যকোনো উৎস নেই এমন এলাকাকে প্রধান্য দিতে হবে। আমার বিবেচনায় আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, নিউমার্কেট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুম-ী লেন, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ এসব এলাকা এ মুহূর্তে অগ্রাধিকারে থাকা উচিত।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। ইদানিং কিছু কিছু আবাসিক এলাকা বা সড়কে ৬ ফুট উচ্চতার স্থায়ী লোহার গেট করে দেয়া হয়েছে। এতে ভারী গাড়ির চাপ থেকে তাদের আবাসিকের সড়ক রক্ষা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কখনো অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটলে এসব এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে পারবে না। এতে অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়। বিয়য়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে। গেটের পরিবর্তে আইনের যথাযথ প্রয়োগেও ভারী গাড়ির প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

Advertisement
Share.

Leave A Reply