fbpx

জন্মনিয়ন্ত্রণে কোন পদ্ধতি উপযুক্ত?

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। ৫০ বছর আগে টোটাল ফার্টিলিটি রেট টিএফআর ছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ওই সময় একজন মা গড়ে সাতটি সন্তান জন্ম দিতেন। বর্তমানে বাংলাদেশের টিএফআর ২ দশমিক ১ শতাংশ। ৫ দশক আগে মোট জনগণের ৮ শতাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করলেও, এখন সেই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ শতাংশে। আর এটি সম্ভব হয়েছে কন্ট্রাসেপটিভ বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির বদৌলতে।

ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী বেগম বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘আগের তুলনায় মানুষের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতনতা বেড়েছে। এখনকার দম্পত্তিরা দুটি সন্তানের বেশি নিতে চান না। বেশিরভাগই অস্থায়ী পদ্ধতি অনুসরণ করতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, ‘কনডম, পিল, ইনজেকশন, ইমপ্ল্যান্ট, কপার-টি ইত্যাদি পদ্ধতিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন অধিকাংশ দম্পত্তি। তবে নারীদের লম্বা সময় ধরে পিলের উপর নির্ভরশীল হতে দেখা যায়, সেটি কোনওভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। পিল গ্রহণের প্রথম দিকে মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে বা পরিমাণ কমে যায়। এটি মোটেও অস্বাভাবিক নয়। একদিন বা দু’দিন মাসিক হলেই হয়। নিয়মিত হতে হবে এমন কোন কথা নেই।’

অস্থায়ী পদ্ধতি সম্পর্কে ডা. ফেরদৌসী আরও বলেন, ‘পিলে কারও অসুবিধা হলে তিনি ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে পরামর্শ করে অন্য আরেকটি ব্যবস্থা নিয়ে নেবেন। অথবা যারা প্রতিদিন পিল খেতে ভুলে যান, তারা তিন মাসের জন্য যে ইনজেকশনের ব্যবস্থা আছে, সেটি নেবেন। অথবা ইমপ্লান্ট নেবেন। অর্থাৎ হাতের মধ্যে কাঠি ঢুকানোর যে ব্যবস্থা। সেটিও খুব নিরাপদ। সেটি ৩ বছর অথবা ৫ বছরের জন্য করাতে পারেন। কেউ সন্তান নিতে চাইলে কাঠি খুলে ফেলবেন। দুই তিন মাসের মধ্যে স্বাভাবিক মাসিকের অবস্থায় ফিরে এলেই সন্তান ধারণ করতে পারবেন বলে আমরা আশা করি।’

স্থায়ী পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দু’টি সন্তান বা তিনটি সন্তানের পরপরই অস্থায়ী পদ্ধতির বদলে স্থায়ী পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। স্থায়ী পদ্ধতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে। সেটি ভুল। স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, এটি এতোটাই নিরাপদ যে, দম্পতি যখন সন্তান চাইবে, তখনই পদ্ধতি ছেড়ে সহজেই গর্ভধারণ করতে পারবেন। এ বিষয়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন এবং আপনার সাথে মানিয়ে যায় আপনার শরীরের জন্য উপযুক্ত কিনা তা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে একটি স্থায়ী পদ্ধতি নেবেন। আপনি নিরাপদে থাকবেন আপনার পরিবারকেও নিরাপদে রাখলেন।’

বয়স্কদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে এই গাইনি চিকিৎসক বলেন, ‘মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও গর্ভে সন্তান আসতে পারে। তাই মাসিক বন্ধ হবার পরেও অন্তত এক বছর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এক্ষেত্রে স্থায়ী পদ্ধতিই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।’

প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের উচিত স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে পরামর্শ করে উপযুক্ত পদ্ধতি বেছে নেওয়া। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে পরিবার ও সমাজের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি সুনাগরিক গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি করে। তাই শতভাগ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনুসরণ ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিকল্প নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply