বরিশালবাসীর কাছে ডা. মনীষা চক্রবর্তী আলোচিত সাধারণের নেতা হিসেবে। রাজনৈতিক পরিচয়ে তিনি বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের(বাসদ) বরিশাল জেলার সদস্যসচিব। ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন মনীষা। ভোটের দিন অনিয়মের প্রতিবাদে নির্বাচনে বর্জন করেন তিনি। ভোট শেষ হলেও মানুষের জন্য সংগ্রামরত মনীষা মাঠ ছাড়েননি। জনগণের জন্য প্রয়োজন এমন কাজের মাধ্যমে ডা.মনীষা বরিশালবাসীর কাছে ইতিবাচক আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের(ববি) চলমান ছাত্র বিক্ষোভ প্রসঙ্গে গতকাল বুধবার তিনি তার ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেন,
‘গতকাল রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার বিষয়টি অত্যন্ত ভয়াবহ ও নিন্দনীয়। প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীকে রাতের আঁধারে বাসা থেকে ধরে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল এই – এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন মামলা করেনি, পুলিশও কাউকে গ্রেফতার করেনি। উলটো তারা -যে ছাত্ররা মার খেল, যাদের ভাইরা হাসপাতালের বিছানায়- তাদেরকেই চাপ দিচ্ছেন আন্দোলন থামানোর জন্য। আবার একটি মহল এই ঘটনাটিকে শুধুমাত্র ছাত্র-শ্রমিক দ্বন্দ্ব বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু সত্যিই কি তাই?
শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, গতকাল বিকেলে দুইজন শিক্ষার্থীর সাথে একটি বাস কাউন্টারের হেল্পারের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এটুকু সঠিক। কিন্তু তারপর থেকে নাটকের মঞ্চে প্রবেশ করেন রূপাতলি বাস মালিক সমিতির প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ যারা চেষ্টা করেন ঘটনা ধামাচাপা দিতে। কিন্তু তাদের চেষ্টা ব্যার্থ হয় ও ছাত্রদের চাপের মুখে ঐ শ্রমিক গ্রেফতার হয়। ক্ষমতাশালী ব্যাক্তিরা অপমানিত বোধ করেন। এবং তার ফলশ্রুতিতেই রাতের বেলা রূপাতলিতে মেসে মেসে গিয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিনা জিজ্ঞাসা করে করে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে সাধারণ ছাত্ররা মনে করেন।
কোন বাসের হেল্পার বা সাধারণ শ্রমিকের পক্ষে এরকম সংগঠিতভাবে সশস্ত্র হয়ে রূপাতলী এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মেসে মেসে গিয়ে গভীর রাতে এই তাণ্ডব চালানো সম্ভব বলে যারা মনে করেন- তারা হয় প্রকৃত ঘটনা দেখেন না বা দেখতে চান না। বরিশাল শহরে ক্ষমতার দানবীয় প্রদর্শন দিনদিন বাড়ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। ক্ষমতাসীন দলের একজন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকে ইভ টিজিং এর অপরাধে আটক করলে বরিশাল অচল করে দেয়ার মত ঘটনাও আমরা দেখেছি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার মধ্য দিয়ে এই নগ্ন ক্ষমতা প্রদর্শনে নতুন মাত্রা যোগ হল।
বরিশালের সকলস্তরের সচেতন মানুষের উচিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্ম হওয়া এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হওয়া। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট আগামীকাল সকালে (বৃহস্পতিবার) বরিশালে বিক্ষোভ করবে। আসুন, আমরা সবাই নিজের জায়গা থেকে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করি।
আমাদের বরিশাল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে পারে না!