‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল’ আবহাওয়ার স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকরা পরবর্তী চার সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাবেন। ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর’ ও ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর’-এর সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
গতকাল রাজধানীর বিজয় সরণিতে বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরের মাল্টিপারপাস হলে ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল’ স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমানে কৃষকরা সাধারণত দৈনিক থেকে সর্বোচ্চ পাঁচদিন পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেয়ে থাকেন। কিন্তু এ স্বল্প সময়ের আগাম তথ্য দিয়ে তারা ফসল উৎপাদন এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে এবং প্রয়োগে পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল’ স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার মাধ্যমে সেই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
তারা বলেন, ‘ফসল উৎপাদনে আবহাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কৃষককে যেমন উৎপাদনে ঝুঁকি নিতে হয়, তেমনি আবহাওয়ার আগাম সঠিক তথ্য না থাকায় কৃষি উপকরণগুলোর অপচয়সহ সামগ্রিক উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এজন্য কৃষকের কাছে আবহাওয়ার আগাম তথ্য থাকাটা জরুরি। এ সিস্টেমের মাধ্যমে আবহাওয়া অনুযায়ী ফসল নির্বাচন থেকে শুরু করে উৎপাদনসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘এ পূর্বাভাস ব্যবস্থা শুধু আমাদের কৃষকদের জন্যই নয়, কৃষি খাতের সমগ্র মূল্য শৃঙ্খলের জন্যও উপকারী। এটি আমাদের নীতিনির্ধারকদের কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তার জন্য কার্যকর নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়নে সাহায্য করবে। এটি আমাদের কৃষি উপকরণ সরবরাহকারী, প্রসেসর ও রফতানিকারকদের তাদের সাপ্লাই চেইন পরিচালনা করতে, ঝুঁকি কমাতে এবং বিশ্ববাজারে তাদের প্রতিযোগিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় নেদারল্যান্ডসের ‘ওয়েদার ইম্প্যাক্ট’-এর গবেষক এবং প্রকল্প সমন্বয়ক বব অ্যামারলান তার উপস্থাপনায় ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল’ আবহাওয়ার স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত এবং প্রায়োগিক দিক তুলে ধরেন। এ স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার মাধ্যমে আবহাওয়া বুলেটিন, কৃষি-আবহাওয়া তথ্য সার্ভিস কীভাবে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় সে বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শাহ্ কামাল খান। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষকদের জন্য তাদের খামার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় সাব-সিজনাল এবং সিজনাল আবহাওয়ার তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা বাস্তবায়ন করতে ডিএই, বিএমডির সক্রিয় সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।’
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পরিচালক মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার ওসমান হারুনি, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার ও ডিএইর মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস।