fbpx

দুই বছরেও কাটেনি করোনা নিয়ে ভুল ধারণা!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

‘রোদে থাকলে করোনা হয়না, হলেও ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায়,’ কারওয়ান বাজারের একজন রিকশা চালক জানালেন একথা। তার মতো অনেক খেটে খাওয়া মানুষ বিশ্বাস করেন, তাদের করোনা হবে না।

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রায় দেড় বছরেও অনেকেই বিশ্বাস করেন, রোদে কাজ করলে বা রোদে থাকলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার কোন সম্ভাবনাই থাকে না।

রাজধানী ঘুরে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল, তাদের অনেকেই এখনো বিশ্বাস করেন, রোদে থাকলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা নেই। হলেও তা সেরে যাবে রোদে ও গরমে।

যেখানে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা শীতের মৌসুমে দেখা দেয়, গরমে থাকে না। টাইফয়েড আবার গ্রীষ্মে বাড়ে, শীতে কমে। করোনাভাইরাস মানছেনা শীত গ্রীষ্ম।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বিবিএস বাংলাকে বলেন, ‘রোদের গরমে কথনোই করোনা সেরে যায় না। পৃথিবীর কোথাও কোন গবেষণায় এরকম কিছু প্রমাণিত হয়নি। রোদে দাঁড়ালে মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদিত হয়। ভিটামিন ডি থাকা শরীরে করোনা হয়, আবার ভিটামিন ডি না থাকা শরীরেও করোনা হয়। তাই গরম বা রোদ করোনাভাইরাসকে কাবু করতে পারে না।’

করোনাভাইরাস দূর করার আরেকটি কুসংস্কার প্রচলিত, তা হলো গরম পানি পান করলে মুক্ত থাকা যাবে করোনাভাইরাস থেকে।

বাস্তবে প্রয়োগ করে আসলেই কি ফল পেয়েছেন কেউ? এমন প্রশ্নের জবাবে সাধারণ মানুষ জানান, অনেকেই করোনা হবার পর গরম চা ও পানি পান করেছেন, তাদের কোন কাজেই আসেনি। এমনকি করোনা যেনো না হয় তার জন্যেও সারাদিনে কয়েকবার করে গরম পানি পান করেছেন, তবু করোনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।

এ বিষয়ে ডা. লেলিন বলেন, ‘এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। করোনাভাইরাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হিট দিলে তা মরে যায়। তাই বলে কেউ তো আর ৭০ ডিগ্রি গরমে পানি পান করতে পারে না। তাতে করে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানুষ মারা যেতে পারে। তাই গরম পানি বা চা খেয়ে প্রতিরোধ করার উপর জোর না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার উপর জোর দিতে হবে।’

যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গরম পানীয় ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে, এখনও কোন বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পানি খেলে বা গার্গল করলে এই ভাইরাস ধুয়ে যায় না।

আন্তর্জাতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, চীনের জিলিন ও হেইলংজিয়াঙ্গ এর মতো ঠান্ডা এলাকায় যেমন ভাইরাসের বিস্তার বাড়তে দেখা গেছে, তেমনি গুয়াংজু এবং সিঙ্গাপুরের মতো গ্রীষ্মপ্রধান এলাকাতেও একইরকম বিস্তার দেখা গেছে। তাই আবহাওয়া, তাপমাত্রা বা গরম পানিকে গুরুত্ব না দিয়ে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানো এই ভয়ানক ভাইরাসের বিস্তার রোধে মানুষের আচরণকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে মত দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply