১৫ দফা দাবিতে সারা দেশে চলছে ট্রাক মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি। ৭২ ঘণ্টার কর্মবিরতির আজ দ্বিতীয় দিন পালন করছে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
এ কর্মবিরতিতে আজ বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। কয়েকশ’ পণ্যবাহী ট্রাক আটকে আছে বেনাপোল বন্দরে। আর এর ফলে বন্ধ রয়েছে পণ্যপরিবহন।
কর্মবিরতির কারণে প্রায় থমকে গেছে চট্টগ্রাম ও বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম। তবে অন্য বন্দরগুলো স্বাভাবিক আছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার সকালেও যানবাহনের চালক ও শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
আমদানি করা পণ্য ডেলিভারি নিতে কোনো ট্রাক-কাভার্ডভ্যান এবং লরি বন্দরে ঢুকতে পারেনি। একইভাবে, বন্দরে ঢোকা গাড়িগুলোও সকালে বন্দর থেকে বের হতে পারেনি। এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।
সাধারণত কনটেইনার পরিবহনকারী গাড়িতে চট্টগ্রামের ১৮টি ডিপো থেকে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ও খালি কনটেইনার আনা-নেওয়া হয়, কর্মবিরতির কারণে যা এখন বন্ধ।
এদিকে, যশোরের বেনাপোল বন্দর থেকেও সব ধরনের পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দেখা দিয়েছে পণ্যজট। তবে, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলে জানা গেছে।
যশোর জেলা ট্রাক মালিক সমিতি বাংলাদেশ ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইম মুভার পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বেনাপোলে এ কর্মবিরতি পালন করছে।
বন্দর সূত্র থেকে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কোনো ট্রাক পণ্য লোড করেনি বা বেনাপোল ছেড়ে যায়নি। আজ বুধবারও পরিস্থিতি একইরকম আছে।
এদিকে, কর্মবিরতিতে সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দরে কোনো প্রভাব পড়েনি। ভোমরা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। লোড-আনলোড ও পণ্যপরিবহন চলছে স্বাভাবিকভাবেই। তবে নিশ্চিত ক্ষতির মুখে না পড়ে যায়, এই আশংকা রয়েছে আমদানিকারক প্রতিনিধিদের মধ্যে। আর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন, সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীসহ বন্দরের ১০ হাজার শ্রমিকও।
তবে, কর্মবিরতিতে ব্যাহত হচ্ছে সুলভমূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি। এই সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে দীর্ঘমেয়াদে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।
এ কর্মবিরতি চলমান থাকলে টিসিবির সুলভমূল্যের পণ্য বিক্রির স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
করোনা সংকটকে কিছুটা সামলে দেশে যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রপ্তানি আদেশ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, তখন আবারও বাংলাদেশকে ভাবমূর্তি সংকটে ফেলতে পারে এ রকম কর্মসূচি -এমন আশঙ্কা তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র।