fbpx

ধনী দেশগুলোর প্রতি সবক’টি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের চাহিদার স্বীকৃতি দাবি প্রধানমন্ত্রীর

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বিশেষ করে দরিদ্রতম যে ৪৮টি দেশ সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত, অথচ বিশ্বে কার্বন নিঃসরণে যাদের অবদান শতকরা মাত্র ৫ ভাগ, তাদের অর্থায়ন চাহিদার দ্রুত স্বীকৃতি দাবি ধনী দেশগুলোর কাছে করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার (১ নভেম্বর) কোপ২৬ সম্মেলনস্থলের কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে ‘সিভিএফ-কমনওয়েলথ হাই-লেভেল ডিসকাশন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেওয়ার সময় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ধনী দেশগুলোর প্রতি সবক’টি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের চাহিদার স্বীকৃতি দাবি প্রধানমন্ত্রীর

ছবি: পিআইডি/ফোকাস বাংলা

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এখন একটি বৈশ্বিক এবং আন্তঃসীমান্ত সমস্যা এবং এর মারাত্মক পরিণতি থেকে কোনো দেশই মুক্ত নয়।’ তিনি প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে সিভিএফ এবং কমনওয়েলথ দেশগুলোর যৌথ পদক্ষেপের পাশাপাশি বাস্তবসম্মত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থানীয়ভাবে প্রাধান্য দিয়ে সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ধনী দেশগুলোর প্রতি সবক’টি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের চাহিদার স্বীকৃতি দাবি প্রধানমন্ত্রীর

ছবি: পিআইডি/ফোকাস বাংলা

তিনি বলেন, জলবায়ু দুর্যোগের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবং এসবের প্রভাব নাজুক দেশগুলোকে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করছে। এই গ্রহ এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাতে সকলকে জরুরি এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

সিভিএফ এবং কমনওয়েলথের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতার জন্য সিভিএফ-এর চেয়ার শেখ হাসিনা ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাবগুলো হলো –

প্রথম দফা : ‘আমাদের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য টেকসই, সবুজ এবং প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান অর্জনে আমাদের মধ্যে জ্ঞান ভাগ করে নেওয়া, গবেষণা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর বাড়াতে হবে’।

দ্বিতীয় দফা : ‘আমাদের অভিন্ন অবস্থান প্যারিস চুক্তিতে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, উন্নত দেশগুলোকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার সুরক্ষিত করতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। জলবায়ুু অর্থায়ন হতে হবে বিদ্যমান এবং ভবিষ্যত ওডিএ’র অতিরিক্ত। এই পরিমাণটি অভিযোজন এবং প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ অনুপাতের সাথে বরাদ্দ করা উচিত।’

তৃতীয় দফা : ‘জলবায়ু অভিবাসীদের সমস্যা-জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা এবং খরার কারণে মানুষ তাদের পৈতৃক ভিটা এবং ঐতিহ্যবাহী পেশা থেকে চ্যুত হয়েছেন, যা আলোচনা করা দরকার এবং এইসব মানুষের পুনর্বাসনের জন্য বিশ্বব্যাপী দায়িত্ব নিতে হবে’।

চতুর্থ দফা : ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রিতে রাখতে তাদের উচ্চাভিলাষী এবং আগ্রাসী এনডিসি ঘোষণা করতে প্রধান নির্গমনকারী দেশগুলোর ওপর চাপ হিসাবে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি, জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা মেটানোসহ সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ প্রযুক্তি হন্তান্তর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

ধনী দেশগুলোর প্রতি সবক’টি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের চাহিদার স্বীকৃতি দাবি প্রধানমন্ত্রীর

ছবি: বাসস

পঞ্চম দফা : ‘একসাথে সিভিএফ এবং কমনওয়েলথ সদস্যদের অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাস্তবসম্মত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থানীয়ভাবে পরিচালিত সমাধানগুলি খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে’।

ষষ্ঠ দফা : ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন এবং প্রযুক্তি হন্তান্তরের জন্য আমাদের দুর্বলতা এবং প্রয়োজনীয়তাকে অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে’।

বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের জন্য বাংলাদেশকে প্রায়ই ‘গ্রাউন্ড জিরো’ বলা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্বলতা এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অনুকরণীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছি’।

তিনি একটি উচ্চাভিলাষী এবং হালনাগাদ এনডিসি’রও উল্লেখ করেন তাঁর বক্তব্যে, যা সম্প্রতি বাংলাদেশ জমা দিয়েছে ইউএনএফসিসিসিতে।

এর আগে, কপ২৬ বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরে রবিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে স্কটল্যান্ডের বন্দর নগরী গ্লাসগো পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply