fbpx

নিজেকে অনাথ মনে হচ্ছে : তিন্নি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

১৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ৩টা ১ মিনিটে মারা যান শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির দাদি বাসন্তী রানী দত্ত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫। ৭ সন্তানের মা বাসন্তী রানী মৃত্যুকালে ৬ সন্তান ও ১২ জন নাত নাতনি রেখে গেছেন। দাদির স্মরণে তিন্নি লিখেছেন এক শোকগাঁথা। বিবিএসবাংলার পাঠকের জন্য লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

আমার ঠাকুমা আমাদের সবাইকে একা করে চলে গেছেন। ঠাকুমা আমার সবকিছু ছিলো। পরিবারের বড় সন্তান হওয়ার কারণে আমার সাথে ঠাকুমার অসম্ভব হৃদ্যতা ছিলো। আমি ছোটবেলায় নিজেকে ঠাকুমার সতীন মানতাম আর সবসময় দাদুকে বলতাম আমি তাঁর দ্বিতীয় বউ। দাদু-ঠাকুমার প্রতি বিবাহবার্ষিকীতে আমাকেও বউ এর মতো সাজতেই হতো। আমার সব আদর ছিলো দাদু আর ঠাকুমার কাছে। ছোটবেলায় বাবা যদি একটুও আমাকে মারতো, দাদু আর ঠাকুমা ব্যাগ গোছানো শুরু করতো চলে যাবে বলে। আর বাবাকে বলতো, “তুমি যদি আরেকবার দিদনের গায়ে হাত উঠাও, আমরা থাকব না, আর কোনোদিন আসব না তোমার কাছে।” দাদু আমাকে ‘’দিদন’’ ডাকতো আর ঠাকুমা ডাকতো ‘’তনু’’। আসলে অনেক নামেই ডাকতো।

নিজেকে অনাথ মনে হচ্ছে : তিন্নি

ডা: জগদীশ চন্দ্র দত্ত ও বাসন্তী রানী দত্ত। ছবি : ফেসবুক

আমার দাদু থাকলো না, আবার ঠাকুমাও চলে গেলো। জীবনে প্রথমবার নিজেকে খুব অসহায় লাগছে, নিজেকে অনাথ মনে হচ্ছে। কিছু যে লিখব, আর পারছি না। সবাইকে শুধু এটাই অনুরোধ করব, আমার ঠাকুমার জন্য প্রার্থনা করবেন, আমার ঠাকুমার আত্মার শান্তি কামনা করবেন। আজকে বাবার সাথে যখন কথা বলি তখন আমি শুধু একটা কথাই বললাম, ‘বাবা, সব শেষ?’ বাবা বললো, “হ্যা রে মা।“ আমি যখন কান্না করছিলাম তখন বাবা বললো, “কাঁদিস না, আমার মা এখন বাবার কাছে আছে। তাঁরা এখন অনেক ভালো আছেন।“?”

মনটা না আমার কেমন একটা লাগছে। আর কোনদিন নেত্রকোণাতে গেলে আমার জান পাখি ঠাকুমাকে বারান্দায় বসে রোদ পোহাতে দেখবো না। আর কখনো গাছের ফল খাওয়ার পর কেউ জিজ্ঞেস করবে না “কিরে, ঢাকার ফলডি যে খাস, হেডায় স্বাদ না আমার গাছের?”

নিজেকে অনাথ মনে হচ্ছে : তিন্নি

পরম মমতায় তিন্নি ও তার দাদি। ছবি : ফেসবুক

আহারে ঠাকুমা কতো ভালোবাসতে বাগান করতে, আমার ঠাকুমার হাতের গাছ অনেক সুন্দর হতো।
আচ্ছা আমার না আর লিখতে কষ্ট হচ্ছে। আমার মানতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার ঠাকুমা কখনোই আমার থেকে দূরে না। আমি বিশ্বাস করি ঠাকুমা আমার সাথেই আছেন। ঠিক এসময়, এ মুহূর্তে, ওহ ঠাকুমা, ঠাকুমা, তোমাকে কেউ আর ইনজেকশন দিতে আসবে না।

Advertisement
Share.

Leave A Reply