ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ইউটিউবার ডলি সিং। ইন্সটাগ্রাম ও ইউটিউবের জন্য মজার মজার ভিডিও কনটেন্ট নির্মাণ করেন এই তরুণী। গেল বছর ইন্সটাগ্রামেই মিলিয়ন ফলোয়ার পার করেছে এই তারকা।
তবে এত খ্যাতি, পরিচিতি, ভক্তদের ভালবাসা কিছুই যেন তাকে খুশি করতে পারছে না। আনন্দে থাকার বদলে বিষন্নতাতেই ভুগছেন ডলি।

ইমপোস্টার সিন্ড্রোমে ভুগছেন ভারতীয় ইউটিউবার ডলি সিং।
ছবি: ইন্সটাগ্রাম
চিকিৎসকরা জানান তার এই বিষন্নতার কারণ তিনি ইমপোস্টার সিন্ড্রোমে ভুগছেন।
ইমপোস্টার সিন্ড্রোম একটি মানসিক রোগ। এটা ইমপোস্টার ফেনোমেনন, ইমপোস্টোরিজম, ফ্রড সিনড্রোম নামেও পরিচিত। ইমপোস্টার সিন্ড্রোমে ভোগা ব্যক্তিরা নিজের সাফল্য নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। তারা সব সময় ‘নিজে প্রতারক’ হিসেবে অন্যদের কাছে প্রকাশ হওয়ার ভয়ে থাকেন। তারা মনে করেন তিনি যা অর্জন করেছেন তার জন্য মোটেও যোগ্য নন। এছাড়াও তারা নিজেদের সাফল্যের জন্য অন্যদের প্রতারিত করার মতো বুদ্ধিকে কারণ হিসেবে মনে করে।
ডলি বলেন, ‘ যখন কেউ আমাকে প্রসংশা করেন, কিছু উপহার দেন…..আমার মনে হয় কেন? কেন আমার জন্য তারা এসব করছেন? আমি এসবের যোগ্য নই।’
তিনি বলেন, ‘যখন প্রশংসা করে কেউ ফোন করেন, মেইল করেন তখন নিজেকে খুব ছোট মনে হয়। যদিও আমার এতে খুশি হওয়ার কথা। আমার অনুভব করার কথা যে আমি এটি অর্জন করেছি।’
একই রকম অবস্থা সুরভী দে ধুপার নামের আরেক নারীর। তিনি কাজ করেন বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। তিনি জানান, কর্মক্ষেত্রে অনেক ভাল সুযোগ এসেছে। তবে তিনি ভাবতেন এসবের যোগ্য তিনি নন।
সুরভী বলেন, ‘আমি কোনো বিষয়ে কাউকে বেশি প্রশ্ন করি না। আমার মনে হয় আমি ধরা খেয়ে যাবো। আপনি নিজেকে যথেস্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন না, নিজেকে দাম দিচ্ছেন না এই সবচেয়ে বড় সমস্যা।‘
তিনি বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে বেতন নির্ধারণের বিষয়েও তিনি নিজের কোনো চাহিদার কথা জানাতে পারেন না। টাকা কম দেয়া হলেও এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেন না। মনে হয় যা দিচ্ছেন তাই ঠিক।
সুরভী আরও বলেন,’ ইমপোস্টার সিন্ড্রোম নিয়ে কারও কাছে সাহয্য চাওয়াও বড় চ্যালেঞ্জ। সাহায্য চাইলে নিজেকে দূর্বল মনে হয়। এবং এই বিষয়ে অনেক ট্যাবু রয়েছে। বিশেষ করে ভারতে। আমি বলতে চাই এ ক্ষেত্রে সংস্থাগুলো সাহায্য করতে পারে। কারণ বিভিন্ন প্রোগ্রাম, কাউন্সিলিং, থেরাপি ইমপোস্টার সিন্ড্রোমে ভোগাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারে।’
এক সময়ে ইমপোস্টার সিনড্রোমকে নারীদের সমস্যা বলে মনে করা হতো। তবে গবেষণা বলছে নারী-পুরুষ সবাই এই সিনড্রোমে ভূগতে পারেন।