টলিউডে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। অভিনয়ের গন্ডি পেরিয়ে টলিউডের বড় একটা অংশ ঝুঁকে পড়েছে রাজনীতির মাঠে। মিমি-নুসরত-সায়ন্তিকা, সায়নীরা এক দিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন, অন্যদিকে তৃণমূলের প্রতি আক্রমণ হানছেন শ্রাবন্তী, পায়েল, তনুশ্রীরা।
একদিকে প্রচারণা যেমন এগিয়ে চলছে, তেমনি তারকাদের বন্ধুত্বের সংজ্ঞাও যাচ্ছে পাল্টে। ক্যারিয়ার স্ট্রাগলে রাজ চক্রবর্তী এবং রুদ্রনীল ঘোষ পাশাপাশি ছিলেন। তাদের বন্ধুত্বের জমজমাট গল্প টলিউডে সুবিদিত। তৃণমূলের মঞ্চেও তাদের দেখা যেত পাশাপাশি। তবে, গত দু’মাসে বদলে গিয়েছে চেনা অঙ্ক। টেলিভিশন চ্যানেলে পরস্পরের বিরুদ্ধে গলা ফাটাচ্ছেন রাজ আর রুদ্রনীল, যে আক্রমণ নেমে এসেছিল ব্যক্তিগত স্তরেও। ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখার জন্য রাজকে অনেক কিছুই করতে হচ্ছে, এমন মন্তব্য করেছেন রুদ্রনীল। রাজ পাল্টা বলেছেন, ‘রুদ্র এতবার বদলেছে যে, ওর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।’

নির্বাচনী প্রচারণায় রাজ চক্রবর্তী। ছবি: ফেসবুক
সঙ্কটে রুদ্রনীলের সঙ্গে কাঞ্চন মল্লিকের বন্ধুত্বও। রাজনীতির অভিজ্ঞতা না থাকা কাঞ্চন ‘শখের রাজনীতি’ করছেন, এমন কথা শোনা গিয়েছে রুদ্রনীলের মুখে। এ দিকে কাঞ্চন একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কোনও কথাতেই আমল দিচ্ছেন না।

প্রচারণায় ব্যস্ত রুদ্রনীল ঘোষ। ছবি: ফেসবুক
অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীও তৃণমূলের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যদিকে, সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত না হলেও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থান সকলেরই জানা। এমনকি, নাম না নিয়েই রুদ্রনীলের বিরোধিতা করেছেন পরমব্রত।
নির্বাচনী লড়াইয়ে শামিল হওয়া তারকাদের মধ্যকার সমীকরণ সহজ নয়। যেমন নুসরাতের সঙ্গে সায়ন্তিকার সম্পর্ক ভাল নয়। অন্যদিকে কৌশানীর সঙ্গে তৃণমূলের বাকি সেলিব্রেটিদের অন্তরঙ্গতা নেই। জটিলতা বিজেপি শিবিরেও আছে। শ্রাবন্তী, পায়েল সরকার বা তনুশ্রী চক্রবর্তীরা এখন যতই একসাথে সেলফি তুলুন, এদের ঘনিষ্ঠতার গল্প শোনা যায় না কখনোই। এবারের নির্বাচন কি টলিউডের রাজনীতিতেও নতুন সমীকরণ আনবে? সেটা বলে দেবে সময়।

বিজেপি’র হয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত শ্রাবন্তী। ছবি: ফেসবুক
কৌশানী, সায়ন্তিকা, পায়েল, যশ দাশগুপ্ত, পার্নো মিত্র বা সায়নী ঘোষ, এরা সকলেই এখন জনসংযোগে ব্যস্ত। কিন্তু টলিউডের অন্দরেই এদের জনসংযোগ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যশের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির অন্য কোনও তারকার ঘনিষ্ঠতা আছে বলে শোনা যায়না। তিনি থাকেন নিজের মতোই। কৌশানী-বনিও নিজস্ব বৃত্তে মশগুল। একই পরিস্থিতি সায়ন্তিকা বা পার্নোর ক্ষেত্রেও।

ছবি: ফেসবুক
সকলের সব অঙ্ক, সব হিসেব গোলমাল হয়ে গিয়েছে যশ-নুসরাত এবং বনি-কৌশানীকে দেখে। স্বীকার না করলেও ইন্ডাস্ট্রির গুঞ্জন, নুসরাত-যশ প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকে তারা একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, এমন খবরও রয়েছে। কিন্তু, যশ প্রচারণা চালাচ্ছেন বিজেপির হয়ে আর নুসরাত সর্বভারতীয় তৃণমুলের বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের একজন সংসদ সদস্য। তারা দু’জনেই বলছেন, রাজনৈতিক রং তাদের সম্পর্কে পড়বে না। একই কথা বলছেন, তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী এবং বিজেপি সদস্য বনি। তারা যতই বিষয়টি লঘু করে দেখুন না কেন, তাদের এই ‘সহাবস্থান’ দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছে জনসাধারণকে।

প্রেমিক বনি সেনগুপ্ত বিজেপিতে যোগ দিলেও কৌশানি মুখোপাধ্যায় যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। ছবি: ফেসবুক
ভোটের মৌসুম চলে গেলে তারকারা কিভাবে তাদের ব্যাক্তিগত সম্পর্কগুলো সাজিয়ে নেন, সেই অঙ্কেও থাকবে সবার নজর।