রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য এম আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে এ পর্যন্ত বিভিন্ন পদে ১৪১ জনকে অস্থায়ী (এডহক) ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছেন। আর এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাবিতে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
উপাচার্য এম আবদুস সোবহান গতকাল ৬ মে বৃহস্পতিবার তাঁর মেয়াদের শেষ কর্মদিবসেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে তিনি নিয়োগ দিয়ে গেছেন। তাঁর এমন নিয়মবহিভূত কাজের জন্য ঈদের আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে তদন্তকামিটি।
বিশ্ববিদ্যালয় সুত্র বলছে, বিদায়ী উপাচার্য আবদুস সোবহান ২০১৭ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এরপর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। জানা যায় উপাচার্য তাঁর মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়ও উপাচার্যের বাসভবনে ওঠার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি বাসা দখলে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি করেন। আর তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করেন ইউজিসি। তাদের তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা মেলার পর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর এসব কারণেই গত ডিসেম্বর মাসে ১২টি পৃথক নোটিশ দিয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছিল মন্ত্রণালয়।
ইতিমধ্যেই ইউজিসির ওই তদন্তের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের ১০ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে উপাচার্যকে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে উপাচার্য তাঁর মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ করেছেন বলে মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে।
চার সদস্যের এই কমিটির সদস্যরা হলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো.আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাকির হোসেন আখন্দ এবং সদস্যসচিব ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান। গতকাল এই কমিটি করা হয়। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী রোববার প্রথম কর্মদিবস শুরু। এই কমিটি অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে।
ইউজিসির কর্মকর্তারা বলেছেন, যদি তদন্তের ভিত্তিতে আগেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে হয়তো উপাচার্য শেষ দিনে এমন খারাপ নজির সৃষ্টির সুযোগ পেতেন না ।