নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের মামলার রায় অবশেষে ঘোষণা করা হয়েছে।নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) জয়নাল আবদিন মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) এই রায় ঘোষণা করেন।
যেখানে ১৩ আসামির সবাইকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা নুর হোসেন বাদল, আবদুর রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাঈন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন সুমন কনট্রাকটর, নুর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও দেলোয়ার হোসেন দেলুকে রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত করা হয়।
বাকি চার আসামি আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান তারেককে পলাতক দেখিয়ে মামলার বিচার কাজ চলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ লাভলু জানান, ১৩ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার জরিমানা করেছেন বিচারক।
মামলার রায় শুনতে মামলার বাদী ভুক্তভোগী সেই নারীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তার আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রাসুল মামুন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আদালতে উপস্থিত বিভিন্ন মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠনের নেতারাও এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে স্থানীয় সন্ত্রাসী দল দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা মধ্যবয়সী এক নারীকে ঘরে ঢুকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে। তারা ঘরে থাকা নারী ও তার স্বামীকে মারধর, নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা এবং পুরো ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করেন।
ঘটনার একমাস পর ৪ অক্টোবর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত্মগোপনে থাকা ওই নারীকে সেদিন উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর গোটা দেশ বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে।
পরে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর দেলোয়ার বাহিনীর নয়জন সদস্যের নাম উল্লেখ করে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা করেন। ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।