পদ্মা সেতু বাস্তব রূপ পাচ্ছে। দ্রুতই যুক্ত হচ্ছে দেশের উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণ। আর এর প্রভাব পড়েছে সেতু সংশ্লিষ্ট পুরো জনপদ জুড়ে। দ্রুত বাড়ছে এর দু’পাশের জমির মূল্য। পদ্মা পাড় তাই এখন যেন অমূল্য রতন!
গত বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতুর সর্বশেষ ৪১ তম স্প্যানটি বসানো হয়। পূর্ণতা পায় সেতুর কাঠামো। ২০২২ সালেই এই সেতু জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
স্থানীয়রা জানান, একসময় ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কের পাশের জমি কেনাবেচা হতো বেশ কম দামে। সেতুর কাজ যতো এগিয়ে যাচ্ছে, পদ্মার দুই পাড়ের জমির দামও ততো লাফিয়ে বাড়ছে। এখন সেখানে জমির দাম ৮ থেকে ১০ গুণ বেড়ে গেছে।
জমি বেচাকেনার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা যায়, ২০০৭-২০০৮ সালে সরকার নির্ধারিত মৌজার দর ছিল শতাংশ প্রতি ৭ হাজার ১৫৪ টাকা। যা বর্তমানে বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৮৭ হাজার টাকা। তবে এই দর শুধুমাত্র সরকারের ঘোষিত দর। প্রকৃতপক্ষে, বাজারমূল্য সরকারি দরের থেকে দুই থেকে তিনগুণ বেশি।
এদিকে, গত মার্চে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়া হয়। মূলত এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশেই বাড়ছে জমির দাম। একদিকে শিল্পে বিনিয়োগের জন্য উদ্যোক্তারা জমি কিনছেন, অন্যদিক সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি আবাসন ব্যবসায়ীরাও বসে নেই। যোগাযোগ সহজ ও সুলভ হওয়ায় শিল্পে বিনিয়োগের পাশাপাশি অনেকে হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্যও জমি কিনছেন এ এলাকায়।
সেতু সংলগ্ন এলাকায় বাসকারীরা জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরুতে জমি অধিগ্রহণ করার সময় এর মালিকরা জমির মূল্যের দেড়গুণ বেশি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। সেই আইন পরিবর্তন করে সরকার এখন ক্ষতিপূরণের হার তিনগুণ করেছে।
স্থানীয়দের ধারণা, নানা প্রকল্পের জন্য পদ্মাসেতু এলাকায় সামনের দিনে আরও জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশের সাইনবোর্ড দেখেই বোঝা যায়, সেখানে জমিতে শিল্পে বিনিয়োগের চেয়ে আবাসন প্রকল্পই বেশি। তবে এখন চোখে পড়ছে অনেক শিল্প গ্রুপের সাইনবোর্ডও। পদ্মার দুই পাড়ে আধুনিক শহর নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে। তাই একটি সেতু বদলে দিচ্ছে পুরো চিত্রপট। সংযুক্তি এভাবেই আলোড়িত করে জীবনের চাবিকা অর্থনীতিকে।