fbpx

প্রতারণার শিকার হয়েও কারাগারে সাংবাদিক, মুক্তির দাবি স্ত্রীর

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

টোয়েন্টিফোর টিকিটকাণ্ডে প্রতারণার শিকার হয়েছেন একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন ইনচার্জ সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল। এজন্য প্রতারণা করে পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়িক অংশীদারদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন। কিন্তু সেই ঘটনায় হওয়া অন্য মামলায় তাকেই গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, টোয়েন্টিফোর টিকিটকাণ্ডে মিজানুর রহমান কোম্পানিটি থেকে কোনো টাকা নেননি। কাগজে কলমে কোম্পানির ডিরেক্টর হলেও কোনোরকম আর্থিক লেনদেন কিংবা কোম্পানি পরিচালনায় তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকেও তার অ্যাকাউন্টে কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি। এসব তথ্য জানিয়ে তাকে নির্দোষ দাবি করে মুক্তি চেয়েছেন তার স্ত্রী সুমাইয়া সিমা।

সিমা জানান, গত এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে মিজানুর রহমান সোহেল খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক ও তার বোন চেয়ারম্যান মোসা. নাসরিন সুলতানা কোম্পানির অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এ সময়ে মিজানুর রহমান সব পরিচালককে সিসিতে রেখে অফিসের হিসাব চেয়ে দুই দফায় এমডিকে মেইল করেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরই কোম্পানির এমডি ও চেয়ারম্যান লাপাত্তা হয়ে যান। ফলে মিজানুর রহমান তার বিনিয়োগ করা অর্থও (পুঁজি) হারিয়েছেন।

প্রতারণার শিকার হতে যাচ্ছেন, এটা বুঝতে পেরে মিজানুর রহমান এ সময় তাদের উকিল নোটিশ পাঠান। তবে কোনো প্রত্যুত্তর পাননি। গ্রাহক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মামলার আগেই গত ১৯ মে মিজানুর রহমান কোম্পানির এমডি আবদুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান মোসা. নাসরিন সুলতানা ও পরিচালক আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় জিডি করেন। পরবর্তীতে গত ১ জুন সিএমএম আদালতে ১৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ওই চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মিজানুর রহমান। মামলাটি এখন পিবিআইতে (কল্যাণপুর ব্রাঞ্চে) তদন্তাধীন রয়েছে।

মিজানুর রহমানের করা মামলার বিষয়ে পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ বলেন, পিবিআইয়ে থাকা সোহেলের মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিষয়গুলো তদন্ত কর্মকর্তা খতিয়ে দেখছেন।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোম্পানির তথ্য ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচুর নগদ অর্থ উত্তোলন করা হতো। এমডি তার ব্যাংক লোন, গাড়ির কিস্তি অফিসের অ্যাকাউন্ট থেকে দিয়েছেন। পরিচালকদের অনুমোদন না থাকলেও এমডি প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে মাসিক সম্মানি নিয়েছেন। নিজের নামে একাধিক ব্যাংক এফডিআরও করেছেন। অফিসের যৌক্তিক কোনো হিসাব এমডি বা অফিস সংশ্লিষ্ট কারও কাছেই নেই।

গত ১১ অক্টোবর সকালে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমানের টিকিট বিক্রির নামে প্রতারণা করে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অনলাইন এজেন্সি টোয়েন্টিফর টিকিট ডটকম। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় টোয়েন্টিফোর টিকিট ডটকমের পরিচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

টোয়েন্টিফোর টিকিটকাণ্ডে মিজানুর রহমান সোহেলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই সাগর আলী বলেন, তিনি কোম্পানির মালিকদের একজন। যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেটি তদন্তাধীন। তার সংশ্লিষ্টতা কতটা, সেটি এখনই বলা সম্ভব না, তদন্ত শেষ হলে বলা যাবে। মামলা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply