গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ার এই দেশে গোসল এক রকম রোজকার অভ্যাসের মত বিষয়, তবু এ নিয়ে নানা রকম মতামত প্রচলিত আছে। গরমে পুকুর বা নদীর পানিতে দাপাদাপি যেমন শান্তির, তেমনি শীতের কয়েক মাস ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা নিয়ে ভয়ে কুঁকড়ে থাকেন অনেকে।
সাধারণত আমরা ভেবে থাকি প্রতিদিন গোসল করা মানেই পরিচ্ছন্ন থাকা, ত্বক সুন্দর ও লাবণ্যময় হওয়া। কিন্তু সেটা একদমই নাকচ করে দিচ্ছে বর্তমান সাইন্স।
২০১৯ সালে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল প্রকাশিত এক জার্নালে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই-তৃতীয়াংশ নাগরিক প্রতিদিন গোসল করেন। অস্ট্রেলিয়ার ৮০ শতাংশ বাসিন্দা প্রতিদিন গোসল করেন, কিন্তু চীনের অর্ধেক জনগোষ্ঠী সপ্তাহে মাত্র দুইবার গোসল করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, কেবল মানুষ নয়, পৃথিবীর প্রায় সকল প্রাণী গোসল করে।
নিয়মিত গোসল নাকি অনিয়মিত গোসল, এ সম্পর্কে এখানে ডক্টরের কিছু অভিমত তুলে ধরা হলো –
অতিরিক্ত ত্বক পরিষ্কার বা ত্বকে অতিরিক্ত পানির ব্যবহার মোটেই ত্বকের জন্য সুখকর নয়। অনেকে মনে করেন থাকেন অনেকক্ষণ ধরে গোসলের ফলে ত্বকের ইনফেকশন রোধ করা সম্ভব। কিন্তু এটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। হয়তো নিজেকে পরিচ্ছন্ন মনে হবে কিন্তু পানি আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারজার শুষে নেয়। ফলে ত্বক আস্তে আস্তে নির্জীব হয়ে পড়ে।
বয়সের সাথে ত্বক তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়। সেই সাথে দিন দিন ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে থাকে। তাই বয়স্করা যত কম গোসল করবে ততই তাদের ত্বক ভালো থাকবে।
ভালো ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রোটিন উৎপাদনে সাহায্য করে। কিন্তু বেশি গোসল করলে সেটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যে কারণে বেশিরভাগ মানুষের জন্যই সপ্তাহে কয়েকবার গোসল যথেষ্ট। সবচেয়ে ভালো হয় একদিন পর একদিন গোসল করতে পারলে। বেশি গরম পানিতে গোসল করলে, বেশি ক্ষারজাতীয় সাবানের অতিরিক্ত ব্যবহারে শরীরে তেল ও ভালো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবার সংক্ষিপ্ত গোসলও হতে পারে।
শীত মৌসুম তো অবশ্যই, পারলে গ্রীষ্মকালেও চেষ্টা করুন একদিন অন্তর গোসল করতে। এতে ত্বকের স্বাভাবিক ময়েশ্চারাইজার বজায় থাকবে, ত্বক শুষ্ক হবে না।