নওগাঁর মান্দা উপজেলার ইউনিয়নের পার-নূরুল্যাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মনির উদ্দিন পেশায় একজন কৃষক। অভাবের তাড়নায় এক টুকরো জমি চাষাবাদ করতে গরুর বদলে প্রতিবন্ধী ছেলের কাঁধে লাঙল তুলে দেন তিনি ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দরিদ্র কৃষক মনির উদ্দিন নদী ভাঙন ও ঋণে জর্জরিত হয়ে প্রায় এক যুগ আগে তার একমাত্র বলদটি বিক্রি করতে বাধ্য হন। বছর বছর নদী ভাঙনের ফলে সামান্য ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয় তার। এখন বসতবাড়ি ও ফসলিসহ তার মোট জমির পরিমাণ ২৫ শতাংশ। এর মধ্যে আবাদি জমি প্রায় ১৫ শতাংশ। এ সামান্য জমিতেই তিনি সারা বছরই আবাদ করেন।
অভাবের তাড়নায় বাইরে থেকে বেশি দাম দিয়ে হালচাষ করার সামর্থ্য না থাকায়,উপায় না পেয়ে বলদের দায়িত্ব দিলেন প্রতিবন্ধী ছেলে মোখলেছুর রহমানের ঘাড়ে। বাধ্য হয়ে ছেলে মোখলেছুর রহমান লাঙলের মাথায় ও কাঁধে দড়ি বেঁধে টানতেন, আর বৃদ্ধ বাবা মনির উদ্দিন হালের মুঠো ধরে থাকতেন। গরুর বদলে নিজেরাই কষ্ট করে সামান্য এ জমিতে চাষাবাদ করতেন। এভাবেই কেটে গেছে প্রায় তাদের একযুগ ।
বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। দরিদ্র কৃষক মনির উদ্দিনের কে টিম পজিটিভ বাংলাদেশ’ এর পক্ষ থেকে বিনামূল্যে একটি পাওয়ার টিলার দেয়া হয়েছে।
৪ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নূরল্যাবাদ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজ মাঠে এসিআই কোম্পানির পাওয়ার টিলারটি তাকে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
পেয়ে আবেগাপ্লুত কৃষক মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগতেছে। আজ থেকে প্রায় একযুগের কষ্ট আমার দূর হলো। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যেন সবসময় সুস্থ থাকেন। আল্লাহ তাকে যেন দীর্ঘজীবী করেন।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘নদী ভাঙন ও ঋণে জর্জরিত হয়ে হালের গরু বিক্রি করে প্রতিবন্ধী ছেলেকে দিয়ে জোয়াল টানাতে বাধ্য হন এই কৃষক। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। আমাদের একটি প্ল্যাটফর্ম আছে বঙ্গবন্ধুর আর্দশ সৈনিকদের জন্য ‘টিম পজিটিভ বাংলাদেশ’। এই টিমের পক্ষ থেকে অসহায় কৃষক ভাইকে শেখ হাসিনার ভালোবাসার উপহার হিসেবে একটি উন্নতমানের পাওয়ার টিলার দেয়া হয়েছে।’