উইজডম হাউস ছিল এক বিপুল সংগ্রহের পাঠাগার। আব্বাসিয় যুগে ইরাকের বাগদাদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এটি। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ধ্বংস হওয়া এই প্রাচীন পাঠাগারের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাই এর অবস্থান কোথায়, এবং কেমন ছিল তা- সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যায় না।
তবে, ইসলামের স্বর্ণযুগে এটি ছিল ইরাকের বুদ্ধিজীবীদের একটি বাতিঘর। গণিতের ধারণার জন্ম হয়েছিল এখানেই। সাধারণ শূন্য থেকে রূপান্তরীত হয় ‘আরবি’ সংখ্যা।
পাঠাগারটি খলিফা হারুন আল রশিদ অষ্টম শতাব্দীর শেষের দিকে ব্যক্তিগত সংগ্রহ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর প্রায় ৩০ বছর পর এটি পাবলিক লাইব্রেরিতে পরিণত হয়।
এই উইজডম হাইজ বিশ্বের তামাম বিজ্ঞানীদের বাগদাদে টেনে আনতে আকর্ষণ করেছিল। তারা এই শহরের জ্ঞান ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আকৃষ্ট হয়েছিলেন। মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টান পণ্ডিতেরা এক হয়ে এখানে জ্ঞানচর্চা করতেন।
হাউস অফ উইজডম গণিত, জ্যোর্তিবিজ্ঞান, চিকিৎসা, রসায়ন, ভূগোলসহ মানবিক ও বিজ্ঞান শিক্ষার এক অদম্য কেন্দ্র হয়ে উঠে। দর্শন, সাহিত্য, চারুকলা – একই সাথে জ্যোতিষশাস্ত্র নিয়েও এখানে গবেষণা হতো।
১২৫৮ সালে মঙ্গলদের হাতে বাগদাদের গর্ব হাউস অফ উইজডম ধ্বংস হয়। জনশ্রুতি আছে, এখানের এত পাণ্ডুলিপি টাইগ্রিস নদীতে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল যে, এর পানি কালো হয়ে গিয়েছিল। জ্ঞান কখনও বিলীন হয় না। বাগদাদের রেনেসাঁয় অনুরণিত হয় ইসলামিক সাম্রাজ্য, ইউরোপ এবং গোটা বিশ্ব।