পেশায় ছিলেন বাস কন্ডাক্টর, অতি সাধারণ এক চেহারা নিয়ে একদিন হয়ে গেলেন ভারতের দক্ষিণী সিনেমার প্রাণ। টাক মাথা, কিন্তু সিনেমার পর্দায় তিনি হয়ে ওঠেন পুরোদস্তুর সুপুরুষ। পরচুলার ছোঁয়ায় চুলভর্তি অভিনেতার প্রেমে পড়েন লাখো তরুণী। বলছি ভারতীয় সিনেমার সুপারস্টার রজনীকান্তের কথা, যাকে দক্ষিণের বহু মানুষ ভগমান মেনে পুজো করে। এমনকি তাকে ডাকা হয় ‘থালাইভা’ নামে, যার অর্থ হল সব গুরুর গুরু।
তবে এই অভিনেতার সফলতার গল্প শুনতে ভালো লাগলেও এই অর্জন এত সহজ ছিল না। ১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন মাইসোর সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা বেঙ্গালুরে জন্ম নেওয়া রজনীকান্তের আসল নাম শিবাজি রাও গায়েকোয়াড়। পাঁচ বছর বয়সে মা হারা এই অভিনেতা বেঙ্গালুরুর আচার্য পাঠশালা এবং বিবেকানন্দ বালক সঙ্ঘের পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে ১৯৭৩ সালে মাদ্রাজ যান ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে অভিনয়ের ওপর ডিপ্লোমা করতে। একটা সময় রজনীকান্ত হয়ে ওঠেন বলিউড এবং দক্ষিণী সিনেমার সব থেকে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম।
তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের সম্মান, ফিল্ম-ফেয়ার এর সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান, চেভ্যালিয়ার শিবাজি গণেশণ অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সেলেন্স ইন ইন্ডিয়ান সিনেমা, পদ্মভূষণ, পদ্ম বিভূষণের মত সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন।
১৯৭৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত তামিল সিনেমা ‘অপূর্ব রাগাঙ্গল’ এর মাধ্যমে তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর পথচলা শুরু। বয়সকে স্রেফ সংখ্যায় পরিণত করা চিরসবুজ রজনীকান্ত এখনো অ্যাকশন দৃশ্যে সমানতালে দুর্দান্ত অভিনয় করে যাচ্ছেন।
জয়ললিতার মৃত্যুর পর তামিল নাডুতে যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, রজনীকান্ত সেই অভাব পূর্ণ করার চেষ্টা করেছেন বিজেপির হয়ে রাজনীতিতে এসে। তবে রাজনীতিতে নামার আগে থেকেই তামিল জনজীবন এবং রাজনীতিতে গভীর প্রভাব রয়েছে তার।
যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্রসহ অন্যান্য দেশের সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন এই সুপাস্টার। ‘শিবাজি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ৮.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্মানী নিয়ে তিনি জ্যাকি চ্যানের পর এশিয়ার সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেয়া তারকার তালিকায় নাম লেখান। অভিনেতা, প্রযোজক আর চিত্রনাট্যকার হিসেবে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়।
রজনীকান্ত সম্পর্কে আরও জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-