গত ২৪ এপ্রিল থেকে টানা তিনদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভারত থেকে অক্সিজেন আসা। হঠাৎ করেই করোনাভাইরাসের রোগী বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন সঙ্কটে পড়েছে দেশটি। তাই কোন রকম ঘোষণা ছাড়াই বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত।
ভারত থেকে অক্সিজেন না আসায় কি বড় ধরনের সমস্যায় পরবে বাংলাদেশে?
বাংলাদেশে বর্তমানে করোনার এখন পর্যন্ত যে পরিস্থিতি তা সামাল দেয়ার মতো অক্সিজেন দেশে উৎপাদিত হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। তবে পরিস্থিতি মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে দেশের উৎপাদিত অক্সিজেন দিয়ে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে বলেও মনে করছেন তারা।
হঠাৎ করেই বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ করার কারণ হিসেবে অক্সিজেন আমদানিকারকের একজন প্রতিনিধি জানান, ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা তাদের জানিয়েছেন- সংকটের কারণে তারা বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি করতে পারছেন না। এছাড়া রপ্তানি না করার বিষয়ে ভারত সরকারেরও কিছুটা চাপ রয়েছে।
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় বিশ্ব এখন তরল অক্সিজেন সঙ্কটে। এই অবস্থায় ভারতে করোনা মহামারি প্রকোট আকার ধারণ করায় বাংলাদেশে অক্সিজেন আসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২১ এপ্রিলের পর থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে তরল অক্সিজেন নিয়ে আর কোনো অক্সিজেনবাহী গাড়ি দেশে আসেনি।
করোনায় সংক্রমিত রোগীদের জীবন বাঁচাতে সম্প্রতি অক্সিজেনের চাহিদা আরও বেড়ে গেছে। দেশের চিকিৎসা খাতে অক্সিজেনের চাহিদার বড় একটি অংশ আমদানি হয়ে থাকে ভারত থেকে। যা কিনা ভারত থেকে প্রতি মাসে শুধু বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি হয়ে থাকে বাংলাদেশে।
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্র বলছে, লিন্ডে বাংলাদেশ, এক্সপেকট্রা, পিওর অক্সিজেনসহ পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে তরল অক্সিজেন আমদানি করে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে ওই অক্সিজেন বাংলাদেশে আসে।
জানা যায় গত ২১ এপ্রিলের আগে ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে এক সপ্তাহে দেশে আসে ৪৯৮ মেট্রিক টনের বেশি তরল অক্সিজেন । ২৯টি ট্যাংকারে এই তরল অক্সিজেন বাংলাদেশে আসে। যার আমদানিমূল্য প্রতি মেট্রিক টন ১৬৫ মার্কিন ডলার। এই অক্সিজেন দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান লিন্ডে বাংলাদেশ ও এক্সপেকট্রা ওই অক্সিজেন আমদানি করে থাকে। তবে বর্তমানে ভারতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের সংকট দেখা দিয়েছে।
ভারতে অক্সিজেনের সংকট দেখা দেয়ায় ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন আর কোনো অক্সিজেন ভারত থেকে দেশে আসছে না।’