মিডিয়ার প্রচার বা টকশো দেখে দেশ পরিচালনা করেন না মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশ পরিচালনা করি অন্তর থেকে। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য, জানালেন তিনি।
১৬ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি সরকারের আমলের ব্যর্থতা ও বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ও তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কঠোর সমালোচনা করেন। সেইসাথে জিয়াউর রহমানের আমলে নিহত ব্যক্তিদের তথ্য খুঁজে বের করার আহ্বানও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের সংসদ সদস্যদের একটা উদ্যোগ নেওয়া উচিত। জিয়ার আমলে প্রত্যেকটা কারাগারে কত মানুষকে ফাঁসি দিয়ে মারা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা, বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা এবং কুমিল্লায়। একটার পর একটা ক্যু আর্মি অফিসার, আর্মি সোলজার, বিমানবাহিনীর ৫৬৮ জন অফিসার এবং সোলজার, সবমিলে এবং কতজন মারা গেছে। এগুলো তো থেকে যায় (রেকর্ড)। তা খুঁজে বের করতে হবে।’
দেশের মানুষের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের একটা বদভ্যাসও আছে। কথায় কথায় হতাশ হওয়া। যতই কাজ করি, তারপরও বলে এটা হলো না কেন? ওটা হলো না কেন? আমি বলতে চাই, এসব না করে আগে কী ছিল আর এখন কী হয়েছে, সেটা দেখলেই তো হয়ে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দারিদ্র্যতার হার ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। করোনায় কিছু মানুষ কাজ পাচ্ছে না। কিন্তু একেবারে না খেয়ে কেউ নেই। দারিদ্র্যের হার বাড়তে পারে, কিন্তু ২০ ভাগ থেকে ৪০ ভাগ হয়ে গেছে, এটা ঠিক না।
তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও রেমিট্যান্স বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। গড় আয়ু বেড়েছে। বিএনপির সময় রিজার্ভ ছিল ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আজকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি জিয়াকে হত্যা মামলার আসামি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব রেজাউল হায়াত তাঁকে জানান, মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা যায় না। এ কারণে তা করা হয়নি। কিন্তু তাকে আসামি করা উচিত ছিল। কারণ, জিয়া যে ষড়যন্ত্রে জড়িত, তা ফারুক-রশিদ নিজেরাই বলেছেন, বক্তব্যে এমনটাই অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।