fbpx

মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি অব্যাহত, মৃত্যু আরো ৫

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে গুলি চলেছে আবারও। এতে নিহত হয়েছেন আরো পাঁচ বিক্ষোভকারী।

শনিবার (১৩ মার্চ) দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার রাতে বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনের থারকেতা জেলায় বিক্ষোভকারীরা গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবিতে পুলিশ স্টেশনের বাইরে জড়ো হলে পুলিশ তাদের উপর গুলি ছুঁড়ে। এতে রাতারাতি দু’জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। পাশাপাশি, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্ডলে শনিবার এক বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালালে সেখানে দু’জন নিহত ও বেশ ক’জন আহত হয়েছেন। এরপর দুপুরে পাইয়ে শহরেও অপর একজন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি অব্যাহত, মৃত্যু আরো ৫

বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালালে সেখানে নিহত ও বেশ ক’জন আহত হয়েছেন। ছবি: রয়টার্স

এদিকে, বিক্ষোভকারীরা এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজ শনিবার (১৩ মার্চ) সাধারণ মানুষকে সড়কে নেমে আরো বড় বিক্ষোভে অংশ নেয়ার আহ্বান জানায়।

১৯৮৮ সালের ১৩ মার্চ আজকের এই দিনে রেঙ্গুন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফোন মাও দেশটির সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

মাও এবং অন্য এক ছাত্রের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পর সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে যে বিক্ষোভ হয়েছিল, তা ৮-৮-৮৮ বিক্ষোভ নামে পরিচিত। সেই বিক্ষোভে প্রায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তখন আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী হিসেবে পরিচিতি পান অং সান সু চি। সে সময় প্রায় দুই দশক গৃহবন্দী থাকার পর ২০০৮ সালে সামরিক বাহিনী গণতন্ত্র সংস্কারের কাজ শুরু করার সাথে সাথে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। সু চির ‘ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি’ (এনএলডি) ২০১৫ সালে এবং আবারো গত বছর নভেম্বরে নির্বাচনে জয়লাভ করে।

এদিকে, দেশটির সামরিক সরকার এবার নতুন অভিযোগ এনেছে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন অবৈধভাবে ছয় লাখ ডলার ও স্বর্ণ গ্রহণ করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে আনা হয়েছে।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সু চিসহ তার দলের কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়। প্রায় পাঁচ সপ্তাহ ধরে সু চি বন্দি রয়েছেন। তাকে কোথায় রাখা হয়েছে, সে বিষয়েও পরিষ্কার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আটকের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনা হচ্ছে।

১ ফেব্রুয়ারি দেশটির সেনাবাহিনী সু চির দল এনএলডি সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে সেখানে সেনাঅভ্যুত্থান বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। মিয়ানমারের উত্তাল এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ কঠোর অবস্থান নিলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি অব্যাহত, মৃত্যু আরো ৫

মিয়ানমারের উত্তাল এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ কঠোর অবস্থান নিলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারে গণতন্ত্র আবারো ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান এক জোট হয়ে কাজ করতে চাইছে। কিন্তু, দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন এখনো সেনাঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কোন মন্তব্য দেয়নি। অথচ, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি, চীন আগে থেকেই সেনাঅভ্যুত্থানের বিষয়ে জানতো বলে গুঞ্জন থাকলেও চীন তা অস্বীকার করেছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply