১৯৭১ থেকে ২০২১, গুণে গুণে ৫০ বছর। এই ৫০ বছরে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৫০ এর কিছু বেশি। সময়ের হিসেবে সেটা খুবই গৌণ। যে মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজমান, বাংলাদেশের সিনেমায় সেই মুক্তিযুদ্ধই অনেকটা অবহেলিত।
যুদ্ধের সিনেমা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দি ব্যাটেল অফ আলজিয়ার্স, প্লাটুন, দি ব্রিজ অন দ্য কিউই, পাথস অব গ্লোরি, সিডলার’স লিস্ট, অথবা এপোক্যালিপ্স নাউ এর চরিত্র বা দৃশ্য। যা আমাদের কখনও চোখে পানি এনে দেয়, কখনও অমানবিকতা, নিষ্ঠুরতার চরম অবস্থা প্রত্যক্ষ করায়, আমরা ভয়ে শিউরে উঠি। সাহসী যোদ্ধাদের সাহসে কখনও আবার হই রোমাঞ্চিত।
আমরা গর্ব করে বলি আমারাও মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশকে অর্জন করেছি। ১৯৭১ এর যুদ্ধ মানেই কিন্তু শুধু ৭১ সাল নয়, এর বীজ প্রথিত আরও কয়েক বছর আগে। তাই এই যুদ্ধ শুধুমাত্র নয় মাসের সংগ্রাম নয়,তা আরও সুদীর্ঘ সময়ের।
মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির গর্ব, বাঙালির অহংকার। নানা সময়ে গান, কবিতায়, সিনেমায় মুক্তিযুদ্ধ ওঠে এলেও, সেভাবে বলার মতো মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা তৈরি হচ্ছে না। স্বাধীনতার পড়ে যেসব মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা তৈরি হয়েছে, কোনটাতেই যুদ্ধের প্রকৃত প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়নি। খন্ড খন্ড কিছু বিষয় উঠে এলেও মুক্তিযুদ্ধের মতো বড় একটি ক্যানভাস ধারণ করতে পারেনি কোন সিনেমা।
আমাদের সঙ্কটটা আসলে কোথায়? মেধাবী পরিচালক, বাজেট, যথাযথ ইতিহাস পর্যালোচনার অভাব নাকি আমাদের রাজনীতি?
বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের সিনেমাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, সরকারী অনুদানও দেওয়া হচ্ছে, তারপরও মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা বানানোর সফল কান্ডারী অনুপস্থিত। উদাহরণ হয়ে থাকার মতো সিনেমা কেন আমরা তৈরি করতে পারলাম না মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পরেও।
লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিভিষিকা ভুলে মুক্তিযুদ্ধ শেষ পর্যন্ত আমাদের বিজয়ের গর্ব। আমাদের সিনেমায় মুক্তিযুদ্ধ যতটা গুরুত্ব বহন করবে তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের মতাদর্শ তুলে ধরা ততটাই সহজ হবে। তাই আমাদের সিনেমা হোক মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ধারক ও বাহক।
কী বলছেন দেশের সিনেমা বোদ্ধারা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।