মেয়ে শিশু জন্মেছে, এই খবর মানেই গ্রামের ঘরে ঘরে উৎসবের বান। নতুনকে স্বাগত জানাতে শুরু হয় সবুজের আহ্বান। লাগানো হয় একশ ১১টি গাছ।
রাজস্থানের প্রত্যন্ত গ্রাম পিপলান্ত্রি। এখানে কন্যা সন্তানের জন্ম মানেই, পৃথিবীর বুকে আরও কিছু গাছ হেলে-দুলে বেড়ে ওঠা। শীতল ছায়ায় নবজাতকের চারপাশ বাসযোগ্য করে তোলার প্রতিশ্রুতি।
ভারতের এই গ্রামে ১৫ বছর ধরে চলছে এই রীতি। এরমধ্যে লাগানো হয়েছে তিন লাখেরও বেশি গাছ। শুধু কি তাই, নবজাতকের জন্য উপহার হিসেবে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে দেয়া হয় ২১ হাজার টাকা। এ টাকা আসলে গ্রামের বাসিন্দারাই চাঁদা তুলে দেন। আর বাবা মাকেও দিতে হয় ১০ হাজার টাকা।
সব মিলে ৩১ হাজার টাকা ব্যাংকে ফিক্সড করে রাখা হয়। মেয়ের সয়স ১৮ বছর হলে এই টাকা তার উচ্চ শিক্ষা, বিয়েসহ বিশেষ প্রয়োজনে খরচের জন্য। মূলত মেয়েকে যেন বাবা-মা বোঝা না মনে করেন সেই জন্যই এত আয়োজন।
পঞ্চায়েতের তহবিল অবশ্য এমনি এমনি পাওয়া যায় না। এরজন্য বাবা মাকে দুটি শর্ত বেধে দেয়া হয়। আঠারো বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে দেয়া যাবে না, আর অন্যটি মেয়েকে অবশ্যই পড়াশোনা করাতে হবে।
এই দারুণ প্রথাটি শুরু করেছিলেন সাবেক গ্রামপ্রধান শ্যামসুন্দর পালিওয়াল , ২০০৬ সালে। খুব অল্প বয়সেই তার একটি মেয়ে মারা যায়। প্রিয় মন্তানের স্মৃতির উদ্দেশ্যেই গাছ লাগানো শুরু করেন শ্যামসুন্দর। গ্রামে কারো কন্যা সন্তান হলেও গাছ নিয়ে ছুটে যেতেন। এরপর থেকে পিপলান্ত্রি গ্রামে এটা নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়। গ্রামটিতে গাছ লাগানো রিতিমত উৎসবে পরিনত হয়েছে। গাছকে ভালবেসে রাখিও পরানো হয় এখানে। পিপলান্ত্রি গ্রামকে অনুসরণ করছে এখন ভারতের বর্ধমান, ভীরভূমেরও কয়েকটি কয়েকটি গ্রাম।