বয়স বৃদ্ধির ফলে আমাদের দেহে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। যার কারণে বয়স্ক ব্যক্তিদের রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় বেশি। তবে শিশু ও কম বয়সী মানুষদেরও মাঝেমাঝে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম থাকে। ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই জরুরি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও তখন বেশি হয়। ফলে, সারা বছরই আপনি রোগে ভুগতে পারেন। আর, পর্যাপ্ত শক্তি না থাকার ফলে দৈনন্দিন কাজেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। নানান কারণে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। তখন দেহে নানান ঘাটতি দেখা দেয়। তবে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে ও কায়িক পরিশ্রম করলে এই ঘাটতি পূরণ হতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে বাড়ানো যায়?
নানা কারণে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। কিন্তু, আমরা যদি কিছু বিষয়ে সচেতন থাকি, নিয়ম করে পরিমিত, স্বাস্থ্যকর খাবার খাই, তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়ানো সম্ভব। আসুন, জেনে নেই কী কী উপায়ে আমরা আমাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়াতে পারবো।
১।প্রোটিন
প্রোটিন আমাদের দেহের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ করে। বিভিন্ন রোগ মোকাবেলা করতে প্রোটিনের জুড়ি নেই। শরীরের অভ্যন্তরীণ শক্তি বাড়াতেও প্রোটিন বেশ কার্যকরী। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে উন্নত মানের প্রোটিন গ্রহণ করা জরুরি। ডিম, মুরগীর মাংস, সামুদ্রিক মাছ, কচু শাক ও বিভিন্ন প্রকার ডালে রয়েছে ভালো মানের প্রোটিন। তাই আপনার দৈনন্দিন খাবার তালিকায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন সমন্বিত খাবার রাখুন।
২) ভিটামিন সি
ভিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ কার্যকরী। এটি মানব দেহের জন্য অনেক জরুরি একটি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট। যা আমাদের দাঁতের গোঁড়া শক্ত করতে, ত্বক উজ্জ্বল করতে ও চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা ত্বকের বলিরেখা দূর করতে ও বয়সের ছাপ লুকাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসের মতো রোগ মোকাবেলা করতে সাহায্য করে। আমড়া, পেয়ারা, জাম্বুরা, আমলকী, বরই, বাতাবী লেবু ও কমলালেবু ইত্যাদি। সবুজ শাক সবজি যেমন- কাঁচা পেঁপে, কাঁচা মরিচ, পুঁইশাক ও পালং শাকেও প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে।
৩) জিঙ্ক
জিঙ্ক রক্তের শ্বেত রক্তকণিকার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। শ্বেত রক্তকণিকার ক্ষমতা হ্রাস পেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। দৈনিক খাদ্যতালিকায় কাঠ বাদাম, চীনাবাদাম, কাজু বাদাম, শিমের বিচি, দুধ, মাখন ও পনির রাখলে জিঙ্কের অভাব পূরণ হয়।
৪) ভিটামিন বি-১২
দ্রুত রোগ থেকে মুক্তি পেতে ভিটামিন বি-১২ বেশ কার্যকরি। এটি রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। দুগ্ধজাত খাবার ও ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে ভিতামিন বি-১২ রয়েছে।
৫) ব্যায়াম
সামান্য ব্যায়াম, যোগাসন ও ধ্যানের মাধ্যমেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। ব্যায়াম করতে না পারলে রোজ ৪০-৪৫ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন। এতেও আপনার রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিনের সামান্য ব্যায়াম আপনার দেহের রক্ত চলাচল করার ক্ষমতাকে সচল রাখবে, যা রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়াতে বেশ সহায়ক।
তাছাড়া নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, পরিমিত ঘুম মানসিক প্রশান্তি বয়ে আনবে আপনার জন্য।
সুষম খাবার গ্রহণ ও মানসিক চাপ এড়িয়ে আপনি বাড়াতে পারেন আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এতে দূরে থাকবে রোগ বালাই, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।