fbpx

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গৃহীত

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানানোর প্রস্তাব জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার (১২ জুলাই) রাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা সংক্রান্ত এই প্রস্তাব জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

মানবাধিকার পরিষদের এ অধিবেশনে উল্লেখ করা হয়, নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে সম্মানজনক পুনর্বাসনের মাধ্যমে চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করা সম্ভব।

অধিবেশনে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি বাংলাদেশের উদ্যোগে ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সকল সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পেশ করা হয়।

মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শুরু থেকেই প্রস্তাবের বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ দেখা দেয়। তার মধ্যেই নানা তর্ক-বিতর্ক আর আলোচনা শেষে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে প্রবেশের পর জেনেভায় অবস্থিত বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় এই প্রথম কোন প্রস্তাব বিনা ভোটে জাতিসংঘে গৃহীত হলো। সেই বিবেচনায় এবারের প্রস্তাবটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় মাইলফলক।

প্রস্তাবটির বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নির্মম নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশের সীমানা উম্মুক্ত করে দেন। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, গত চার বছরেও মিয়ানমারের অসহযোগিতা ও অনীহার কারণে এখন পর্যন্ত জোরপূর্বক বা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হয়নি।’

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সাথে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দৃশ্যমান ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কেবলমাত্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গাদের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ হারানো উচিত হবে না।’ জাতিসংঘের আলোচ্যসূচিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ও রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি সক্রিয় আলোচনায় রাখা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গৃহীত এই প্রস্তাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যৌন অপরাধসহ সকল প্রকার নির্যাতন, মানবতা-বিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনা ও তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকেও সমর্থন জানানো হয়।

এছাড়া, এই প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ’ বিষয়ে মানবাধিকার পরিষদে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply