তালেবানরা আফগানিস্তানে আগের তুলনায় মধ্যবর্তী ও নমনীয় সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষমতা দখলের পর প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে, দেশটির নারীদের অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। দেশটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হয়েছে, কিন্তু ‘মাঝখানে পর্দা’ দিয়ে। সম্প্রতি, তালেবান সরকার এক নির্দেশনা জারি করে বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নারীদের অবশ্যই ‘আবায়া’ এবং ‘নিকাব’ পরতে হবে।
গতকাল সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদ সংস্থা আমাজ নিউজ এক টুইটার পোস্টে এ কথা জানায়।
টুইটার পোস্টে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে একসাথে ছাত্র-ছাত্রী বসে থাকলেও তাদের মাঝখানে দেওয়া আছে পর্দা।
এর আগে, গত শনিবার জারি করা একটি দীর্ঘ আদেশে তালেবানরা নির্দেশ দেয়, বেসরকারি আফগান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নারীদের আবায়া এবং নিকাব ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি, শ্রেণিকক্ষে অবশ্যই নারী-পুরুষ শিক্ষার্থীদের মাঝে পর্দা দিয়ে বিভক্ত করা থাকতে হবে।
মূলত, আফগানিস্তানে বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা তালেবানদের এটি নির্দেশিত শিক্ষা নীতি। এর আগেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তালেবান জানিয়েছে, তাদের নারী শিক্ষায় কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু নারীদের হিজাব পরে পড়াশোনা করতে হবে।
তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী, শুধুমাত্র নারী শিক্ষক দিয়েই ছাত্রীদের পড়ানো উচিত। কিন্তু, তাও যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ‘ভাল চরিত্রের বৃদ্ধ শিক্ষকের’ কাছেও পড়তে পারবে। এছাড়া, নারী শিক্ষার্থীদের পুরুষ শিক্ষার্থীদের চেয়ে ৫ মিনিট আগে পড়া শেষ করতে হবে।
তালেবানদের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সালে তাদের ক্ষমতা শেষ হওয়ার পর দেশটিতে গড়ে ওঠা প্রাইভেট কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এসব নির্দেশনা প্রযোজ্য ছিল। এমনকি, তখন নারীদের কোথাও বের হলে পুরুষসঙ্গী সাথে রাখা এবং শ্রেণিকক্ষে নারী-পুরুষ একসাথে পড়তে না পারার বাধ্যবাধকতা থাকায় বেশিরভাগ নারীকেই শিক্ষা থেকে সে সময় দূরে সরে যেতে হয়েছিল।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত বিশৃঙ্খলার কারণে গত কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) থেকে আফগানিস্তানে কলেজ ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।