‘আমৃত্যু আমার জীবনে কম্প্রোমাইজ করা সম্ভব নয়। সম্ভব হলে তা অনেক আগেই করতাম এবং ভালো ছেলের মত সব গুছিয়ে বসতাম কেতা নিয়ে। কিন্তু তা হয়ে উঠলো না, সম্ভবত হবেও না। তাতে বাঁচতে হয় বাঁচবো, না হলে বাঁচবো না। তবে এইভাবে শিল্পকে কোলবালিশ করে বাঁচতে চাই না।’- এই দৃঢ় স্বীকারোক্তি প্রবাদ প্রতিম পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের। তিনি সবসময়ই নিজেকে মেলে ধরতেন স্বকীয়তায়।
১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর অখন্ড ভারতে, পুরান ঢাকার ঋষিকেশ দাশ লেনের ঝুলনবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন ঋত্বিক কুমার ঘটক। দেশ ভাগের পর ভারতে চলে যান তিনি। তিনি মোট ৮টি সিনেমা বানিয়েছেন। দেশভাগ নিয়ে তার যত হাহাকার ছিল, এমনটা বোধ হয় আর কারও ছিল না। তার সিনেমার বারবার দেশভাগের হাহাকার উঠে এসেছে।
কেন সিনেমা বানান, এই প্রশ্নের জবাবে একবার তিনি বলেছিলেন, এটা ছাড়া আমি কিছু পারিনা। তিনি সিনেমা বানিয়েছেন নিজের আত্বার তুষ্টির জন্য। সিনেমা বানিয়ে টাকা কামানোর কোন চিন্তা তার ছিল না। এই সিনেমা করতে গিয়েই তিনি সংসার চালাতে হিমসিম খেতেন, শুনতেন স্ত্রীর গঞ্জণা। অভাবের সংসারে লড়তে লড়তে সিনেমা বানানোর ক্ষিদে তিনি মরে যেতে দেননি কখনও।
সেসময় অনেকেই তার কদর বোঝেননি, অনেকে সিনেমা হলে তার সিনেমা দেখতে যাননি। কিন্তু আজ এসে এ কথা সবাই বিশ্বাস করেন যে, ঋত্বিক ঘটকের মত পরিচালক বছরে বছরে জন্মায় না। বিশ্বখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সাথে অন্য কোন পরিচালকের তুলনা অর্থে তার নাম প্রথম দিকেই থাকে।
১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঋত্বিক ঘটকের জীবনাবসান হয়।