সরলপুর ব্যান্ডের ‘যুবতী রাধে’ গানের বেশ কয়েকটি লাইন ময়মনসিংহ গীতিকার বহুল জনপ্রিয় গান ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গান থেকে নেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছিল তা প্রমাণিত হওয়ায় সরলপুর ব্যান্ডের কপিরাইট স্বত্ব বাতিল করা হয়েছে।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও পার্থ বড়ুয়ায় সংগীত পরিচালনায় ২০২০ সালে ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ প্রকাশের পর তাদের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে গানের সত্ত্বাধিকারী সরলপুর ব্যান্ড।
তাদের অভিযোগ ছিল, ‘যুবতী রাধে’ শিরোনামে গানের জন্য ২০১৮ সালের জুনে সরলপুর ব্যান্ডকে কপিরাইট সনদ দেয় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। সেই গানের কথা ও সুর হুবহু রেখে সরলপুরের অনুমতি ছাড়াই ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ শিরোনামে গানটি প্রকাশ করেছে আইপিডিসি।
সরলপুর ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ভোকালিস্ট ও গিটারিস্ট তারিকুল ইসলাম তপনকে ‘যুবতী রাধে’ গানের গীতিকার ও সুরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল কপিরাইট অফিস।
এ নিয়ে পরবর্তীতে বিতর্ক শুরু হলে কপিরাইট অফিস বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগে চিঠি দেয় তারা।
কপিরাইট রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, প্রতিটি বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, গানটিতে ময়মনসিংহ গীতিকার জনপ্রিয় গান থেকে হুবহু বেশক’টি লাইন কপি করা হয়েছে। বিমল কুমার মুখোপাধ্যায় রচিত ‘গ্রামের ছড়া’ বইটির একটি ছড়া থেকেও প্রমাণিত হয়েছে যে, সরলপুর ব্যান্ড ‘যুবতী রাধে’ গানের ৩২টি লাইনের মধ্যে ১২টি লাইন হুবহু কপি করেছে। বাকি ৫টি লাইনে এমন কিছু শব্দ তারা যোগ করেছে, যা ওই আসল গানটির ভাব ও অর্থের সঙ্গে মিলে যায়। আশুতোষ মুখার্জি রচিত একটি বইয়েও ‘তুমি হও যমুনা রাধে’ গানের সঙ্গেও ‘যুবতী রাধে’ গানের মিল পাওয়া যায়।
এমনকি কপিরাইট স্বত্ত্ব নেওয়ার সময় গানটি মৌলিক বলে যে দাবি করেছিল সরলপুর, সেটাও সঠিক নয় বলে এখন প্রমাণিত হয়েছে।
জানা যায়, সরলপুর ব্যান্ড কপিরাইট আইনের ৮৮ ও ৮৯ ধারা ভঙ্গ করেছে। এমনকি নিয়ম অনুযায়ী, তাদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড ও জেলের বিধানও আছে।
কপিরাইট আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ ২ বছরের জেল ও সর্বনিম্ন ৬ মাসের জেলের বিধান রয়েছে।