fbpx

সাড়ে ছয় বছর পর ইউরোপে বাংলার পান

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাড়ে ছয় বছর পর ইউরোপে পুনরায় পান রপ্তানি শুরু হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক রাজধানীর শ্যামপুরে কেন্দ্রিয় প্যাকিং হাউজে ‘ইউরোপে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পান রপ্তানি’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রথম চালানে ২৬ মে রপ্তানি হয়েছে এক মেট্রিক টন পান।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আমাদের নিরলস উদ্যোগের ফলে ইউরোপে পান রপ্তানি আবার শুরু হলো। এটি খুবই আশার কথা। ভবিষ্যতে পান রপ্তানি যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিএফভিএপিইএ) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ড. রাজ্জাক আরও বলেন, কৃষিপণ্যের রপ্তানির সম্ভাবনা অনেক। সে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ইউরোপসহ উন্নত দেশে অন্যান্য কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশে উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা (গ্যাপ) বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সারাদেশে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদন হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব থেকে সনদ দেয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। ফলে, আমরা আশা করছি, দেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে কৃষিপণ্য বড় ভূমিকা রাখবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। একইসাথে কৃষকও লাভবান হবেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পানে ক্ষতিকর সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ থেকে সাময়িকভাবে পান রপ্তানির উপর ইইউ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যা ধাপে ধাপে ২০২০ পর্যন্ত বর্ধিত করে। ইইউ পান রপ্তানিতে কতিপয় শর্ত আরোপ করে। এর মধ্যে ছিল-পান সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া মুক্ত হতে হবে, উৎপাদন হতে শিপমেন্ট পর্যন্ত উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ), গুড হাইজিন প্রাকটিসেস (জিএইপপি), গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিসেস (জিএমপি) অনুসরণ করত হবে এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব হতে সালমোন্যালা ব্যাকটেরিয়া মুক্ত সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
ইইউ আরোপিত শর্তপূরণে বাংলাদেশ অনেকগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে পান আবাদের এলাকা নির্বাচন, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, উত্তম কৃষি চর্চার আলোকে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, মনিটরিং, ট্রেসিবিলিটি বা শনাক্তকরণ,পানের স্যাম্পল টেস্ট, কৃষক নির্বাচন ও প্রশিক্ষণ, রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ, নিয়মিতভাবে পানের জমির মাটি ও পানি পরীক্ষা, রপ্তানি বাজারের জন্য নিরাপদ ও বালাইমুক্ত পান উৎপাদন নির্দেশিকা প্রভৃতি।

এসব উদ্যোগের মাধ্যমে ইইউ’র আরোপিত শর্ত পূরণ করতে পারায় গত ১৫ এপ্রলি পান রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। যার ফলে আজকে পান রপ্তানি আবার শুরু হলো। নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে ২০১২-১৩ সালে ১৮ হাজার ৭৮০ টন ও ২০১৩-১৪ সালে ১৩ হাজার ২৫০ টন পান রপ্তানি হয়। যার মূল্য যথাক্রমে ৩৮ মিলিয়ন ও ৩০ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন ও বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএফভিএপিইএ) সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পান উৎপাদন ও রপ্তানির প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক সামছুল আলম ও বিএফভিএপিইএ’র এডভাইজার মনজুরুল ইসলাম।

Advertisement
Share.

Leave A Reply