fbpx

স্কটল্যান্ডের ‘গর্জনে’র মাঝে রিয়াদের হতাশাময় সংবাদ সম্মেলন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

“যেটা আমি বলছিলাম যে, ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে…”

এটুকু বলেই থামতে হলো রিয়াদকে। কারণ সংবাদ সম্মেলনের শুরু থেকেই স্কটল্যান্ড ড্রেসিংরুম থেকে ক্ষীণভাবে ভেসে আসা হইহল্লার শব্দটা তখন চারগুণ হয়ে রীতিমতো ‘স্লোগান’ হয়ে ফিরে এসেছে।

“রোওওওওর, রোর দ্য স্কটল্যান্ড…!!!”

বাংলা অর্থ ‘গর্জাও, গর্জে ওঠো স্কটল্যান্ড”… এই স্লোগানে প্রায় ১৫ সেকেন্ডের মতো কথা থামিয়ে বসে থাকতে হলো বাংলাদেশ অধিনায়ককে। চোখেমুখে ক্লান্তির সাথে সাথে হতাশার চিহ্নটাও ফুটে উঠছিলো স্পষ্ট। এখানে যেমন থেমে গেলেন, মাঠেও তো স্কটিশ ‘গর্জনের’ সামনেই থেমে যেতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।

৬ উইকেটে ৫৩ থেকে ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৪০ এ শেষ করে প্রতিপক্ষ, যারা কিনা আইসিসির সহযোগী দেশ; পূর্ণ সদস্য হয়ে আরেকদল তাদের বিপক্ষে তুলতে পারে মাত্র ১৩৪। এই হারের ব্যাখ্যা কী? ঠিক কোথায় হেরে গেলো বাংলাদেশ? কেন ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেন ওপেনার দুজন? সিনিয়র তিনজন?- এমন অনেক চাঁছাছোলা প্রশ্নেরই সম্মুখীন হতে হয়েছিল মাহমুদউল্লাহকে, হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই হারের পর যে সুপার টুয়েলভের পথ বাংলাদেশের জন্য হয়ে গেলো আরো কঠিন। অথচ দেশছাড়ার আগে কিনা অধিনায়ক বলে গেছিলেন ‘ব্যর্থতার শেকল ভাঙ্গা’র কথা, স্বপ্ন ছিল সেমিফাইনাল খেলার।

বরাবরই ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত রিয়াদ স্কটল্যান্ড টিমের ওই গর্জনের সামনে যেমন ভদ্রতা দেখিয়ে চুপ করে গেছিলেন, গোটা সংবাদ সম্মেলনেও অবশ্য তেমনি ভদ্রভাবেই নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নিয়েছেন, দেননি কোন অজুহাত। বরং ‘হতাশ’ ‘ফ্রাস্ট্রেটেড’ এই শব্দগুলোই রিয়াদের মুখেই শোনা গেলো বেশি।

“ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা আজ পুরোপুরি হতাশ করেছি। আমাদের পরিকল্পনা ছিল প্রথম পাওয়ারপ্লেটা কাজে লাগানোর। মাঝখানে মুশফিক-সাকিবের জুটিটাও ভালো হয়েছিল। উইকেটও ভালো ছিল। কিন্তু আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। আমাদের দিক দিয়েই দোষ বেশি ছিল।”

মুশফিক ও সাকিবের ‘ভালো জুটি’টাও অবশ্য খুবই মন্থর ছিল। সাকিব করেছেন ২৮ বলে ২০। মুশফিক পরের দিকে একটু হাত খুলতে চাইলেও ৩৮ রান করতে লাগিয়েছেন ৩৬ বল। ৯ নম্বরে সাইফউদ্দিনের মতো অলরাউন্ডার নামেন, এরপরও কেন কাল এতো মন্থর ব্যাটিং করলো উপরের ব্যাটসম্যানরা?

এই মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য তাদের অবশ্য দুষলেন না রিয়াদ। জানিয়ে গেলেন ‘আক্রমনাত্মক ক্রিকেট’ খেলার আশাবাদও। দিয়েছেন আগামী ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারে কিছু পরিবর্তনের আভাসও

“তারা হয়তো ভেবেছিলো যে স্পিনাররা এলে তাদের আক্রমণ করতে পারলে রানরেটটা বাড়ানো যাবে। এবং তারা সেটা শুরুও করেছিল। কিন্তু মাঝখানের ওভারগুলিতে আমাদের দ্রুত কিছু উইকেট পড়ে যাওয়ায় আমরা পিছিয়ে পড়েছি।”

‘ব্যাটিংটা আমাদের চিন্তার জায়গা। আমাদের ব্যাটিংটা ভালও করতে হবে। সর্বোপরি আমাদের আক্রমণাত্বক ক্রিকেট খেলতে হবে। ব্যাটিং অর্ডার আমাদের অনেক লম্বা। এই লম্বা ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে যদি আমরা আক্রমনাত্মক ক্রিকেট না খেলি তাহলে আসলে লাভ নেই। দেখা যাক, পরের ম্যাচের আগে টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে বসা হবে। ব্যাটিং অর্ডারে বা বোলিং অর্ডারে কিছু পরিবর্তন আনা যায় কিনা দেখতে হবে’- যোগ করেছেন রিয়াদ।

এমন হতাশা বা হতাশা থেকে ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যয় ব্যক্ত করা অবশ্য নতুন কিছুই নয় বাংলাদেশ অধিনায়কদের জন্য। তবে বাস্তবতা হলো এখন আগামী দুই ম্যাচে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির সাথে জয় ছাড়া অন্য কোন বিকল্প বাংলাদেশের নেই। রিয়াদরা যাই করুন যেভাবেই করুন, সুপার টুয়েলভে উঠতে না পারলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের মর্যাদায় যে দাগ পড়বে, সেই দাগ স্কটল্যান্ডের গর্জনে যেমন স্তব্ধ ছিলেন রিয়াদ, তেমনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের গতিপথকেও স্তব্ধ করে দিতে যথেষ্ট।

Advertisement
Share.

Leave A Reply