fbpx

স্নাতক পাশ করা ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থীই বেকার, বলছে জরিপ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সম্প্রতি দেশের স্নাতক পাশ করা তরুণদের নিয়ে এক জরিপ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)।

সেই জরিপে উঠে এসেছে,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশ অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশই বেকার থাকছেন। ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি পান। ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনো অন্য কোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর বা কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছেন কিংবা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আর বাকি ৩ শতাংশ স্ব-উদ্যোগে কিছু করছেন।

সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে যারা বেকার থাকছেন, তাদের অধিকাংশই ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বাইরে অন্যান্য বিষয়ে পড়াশোনা করা। অর্থাৎ ব্যবসায় প্রশাসনে পড়া শিক্ষার্থীরাই তুলনামূলকভাবে বেশি চাকরি পাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ব্যবসার দিক থেকেও ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন।

বিআইডিএস চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত জরিপটি পরিচালনা করেছে। দেশের ৫৪টি সরকারি ও বেসরকারি কলেজের ২০১৭ সালে অনার্স (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর দৈবচয়নের ভিত্তিতে মোবাইল ফোনে জরিপটি করা হয়।

জরিপে জানতে চাওয়া হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা শ্রমশক্তিতে কতটুকু অবদান রাখছেন। জরিপে ১ হাজার ৬৩৯ জন শিক্ষার্থী, ২০২ জন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৩৩ জন চাকরিজীবীর মতামত নেওয়া হয়।

জরিপ শেষে দেখা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন, তাদের গড় বেতন ৩০ হাজার টাকা। আর বেকারদের ৬২ শতাংশই ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বাইরে অন্যান্য বিভাগের। তবে করোনার সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলো অনলাইন পাঠদানে বেশ ভালো করেছে। এদের মধ্যে ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানান, করোনার মধ্যে তারা অনলাইনে ক্লাস করেছেন।

তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, স্নাতক শেষ করে চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে তারা শিক্ষক কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পান না। ৮৪ শতাংশ স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থী চাকরি খুঁজতে ইন্টারনেট বা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন। মাত্র ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী জানান, তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি খোঁজার সুবিধা রয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানেরা স্বীকার করেন, তাদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে যথেষ্ট ঘাটতি আছে। এক্ষেত্রে তারা সরকারের নজরদারি এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেন।

বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে মোট ২০ লাখ শিক্ষার্থী আছেন। আর সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে অধিভুক্ত কলেজ আছে ২ হাজার ১৫৪টি। এগুলোর মধ্যে ২৭৯টি সরকারি কলেজ, আর সম্মান পড়ানো হয় এ রকম সরকারি-বেসরকারি কলেজের সংখ্যা ৫৫৭ টি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ বলছে, দেশে শিক্ষিত মানুষের মধ্যেই বেকারের হার বেশি। ৪৭ শতাংশ শিক্ষিতই বেকার। দেশে প্রতিবছর শ্রমশক্তিতে যোগ হচ্ছে ২০ লাখ মানুষ। কিন্তু সেই অনুপাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। ফলে বড় একটি অংশ বেকার থেকে যাচ্ছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করার ১২ মাসের মধ্যে বিশেষ করে ব্যবসায় প্রশাসন, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাই বেশি চাকরি পান।

Advertisement
Share.

Leave A Reply