প্রতি বছর শীত আসে যেন ধোয়া ওঠা পিঠার ঘ্রাণ নিয়ে। সারাদেশ জুড়ে যখন শীত কাপুনি দিয়ে যায়, ঠিক সেই সময় ঢাকার চিত্রটাই ভিন্ন।
‘কী করমু শীত আইলেই তো ঢাকায় আহি। আর পিডা বেচি। পোলার বাপে রিকশা চালায়। শীত গেলে গা আবার বাড়িত চইল্লা যাই।’
এভাবেই বলছিলেন টাঙ্গাইলের শেফালী বেগম। মহাখালী রেল লাইনের পাশেই তার পিঠার দোকান। সেখানেই তাবুর নিচেই স্বামী, দুই সন্তান নিয়ে তার বসতি। প্রতি বছর শীত আসলেই শেফালী পরিবার নিয়েই চলে আসেন ঢাকায়। শীতের হরেক রকম পিঠা বানিয়ে তার ভালো আয় হয় বলে জানান তিনি।
শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে ঢাকার অলি গলিতে শুরু হয় পিঠার আমোদ। গাড়ি থেকে নেমে বা অফিস থেকে বের হয়ে পিঠার দোকানে যাবে না এমন মানুষ হয়তো আর এ শহরে নেই। আর এই সময়টাতেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা।
দোকানগুলোর সামনে গেলে আপনার মন কেড়ে নিবে কয়েক পদের ভর্তার সাথে গরম গরম চিতই পিঠা,নারকেল আর গুড়ে ঠাসা ভাপা পিঠা। সাথে উঁকি দেয় হরেক পদের নকশি পিঠা।
পিঠা বেচে অনেকেরই সুদিন ফিরেছে কেউ কেউ দিয়েছেন আগের চেয়েও বড় পিঠার দোকান। এসব দোকানে কাস্টমারের চাপও বেশি। পিঠা যতো মুখরোচক দোকানে কাস্টমারও তত বেশি।
এ পিঠাওয়ালারা এ শহরে অতিথি। ঘরে পিঠা তৈরি ভুলতে বসা শহরবাসী এর কল্যাণেই পান হিমের পিঠার স্বাদ। একই সঙ্গে এই পিঠা বিক্রেতাদের কল্যাণে একটু হলেও প্রাণ পায় গ্রামীণ অর্থনীতি। স্বাদ আর স্বস্তি তাই পূর্ণতা পায় মুদ্রাগুণে।