fbpx

‘দক্ষতার চেয়ে আর কিছুই বড় হতে পারে না’

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

তিনি পর্দায় তাঁর দুর্দান্ত পারফরমেন্স দিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে দেন। তাঁর অভিনয় এবং সিনেমা সবসময় একটা দর্শন মেনে চলে। অর্থাৎ তিনি এমন গল্প নির্বাচন করেন যেটা শুধু একটা সিনেমা হয়ে ওঠে না, হয়ে ওঠে আস্ত একটা দর্শন।  কিন্তু শুধুমাত্র এগুলো দিয়েই নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীকে বিচার করা যায়না। বাস্তবে নওয়াজুদ্দিন মানেই চমৎকার রসবোধ, সদালাপ এবং নিজস্ব গাম্ভীর্য ধারণকৃত একজন মানুষ। এমনকি তিনি যখন অতীতের নিজের জীবন-যুদ্ধের কথাও বর্ণনা করেন সেটার ভেতরও তাঁর রসবোধের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তিনি বিষয়টি এমনভাবে বর্ণনা করেন যাতে আপনার মনে হবে, এটাও কোন একটি চমৎকার পারফরমেন্সের অংশ। টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে তাঁর দেওয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে বিভিন্ন বিষয়। থিয়েটারে অভিনয় থেকে শুরু করে বলিউড, সিনেমা, অভিনয়, জীবনদর্শনসহ আরো নানা বিষয়। সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ বিবিএস বাংলা’র পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

‘দক্ষতার চেয়ে আর কিছুই বড় হতে পারে না’

সকল চরিত্রে সাবলীল তিনি। ছবি: সংগৃহীত

 নওয়াজ, আপনার ক্ষেত্রে একটি চমৎকার বিষয় লক্ষ্য করা যায়, সেটা হলো আপনি যে সিনেমাতেই, যে চরিত্রেই অভিনয় করেন না কেনো কেউ আপনার অভিনয়কে অগ্রাহ্য করতে পারে না। সেটা হতে পারে কোন বায়ো অথবা সাধারণ কোনো গল্পের সিনেমা। এমনকি ওটিটি প্লাটফর্মের কাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

দেখুন, একটা সিনেমা চলবে কী চলবে না তার জন্য অনেক কারণ থাকে। স্ক্রিনিং, শো এসবের উপর আমার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। আমি শুধু ক্যামেরার সামনে আমার অভিজ্ঞতাগুলোকে সততার মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারি। আমি যখন একটা শট দেই, তারপর সেটা কী হয় আর দেখিনা। তেমনি দর্শকও আমার অভিনয়ের সততাকেই দেখতে পায় যা আমি ক্যামেরার সামনে উপস্থাপন করি। অভিনেতা হিসেবে আমি সিনেমায় আলাদাভাবে আধিপত্য বিস্তার করিনা। আমি কখনো সেটা চাইও না। আমি সিনেমার একজন শিক্ষার্থী আর আজীবন সেটাই থাকতে চাই।

‘দক্ষতার চেয়ে আর কিছুই বড় হতে পারে না’

নিজেকে ছাড়িয়ে তিনি চরিত্রের ভেতর দিয়ে হয়ে ওঠেন অনন্য। ছবি: সংগৃহীত

 দীর্ঘ সময় পর আপনি নতুন একটা চরিত্র চরিত্রায়ণ করেন একজন সুদক্ষ অভিনেতা হিসেবে। প্রত্যেকটি চরিত্র আপনি সুচারুভাবে উপস্থাপন করেন। একজন অভিনেতা হিসেবে নিজের সীমাবদ্ধতা কোথায়? কী মনে করেন আপনি?

থিয়েটার করার সময় আমি প্রায় ১০০ টা কমেডি চরিত্রে অভিনয় করেছি। দিল্লীতে থাকাকালীন আমি যখনই মঞ্চে অভিনয় করতে উঠতাম দর্শক হাহা শুরু করতো। একবার আমার শিক্ষক বললেন, ‘মুম্বাইতে গিয়ে তুমি কখনো কমেডি চরিত্র করবে না। সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করবে।’ আমার চেহারার ভেতর যেহেতু একটা কঠিন ব্যাপার আছে, তাই আমি একটু সিরিয়াস চরিত্রেই কাজ করা শুরু করি। আমি ২০১৬ সালে ‘ফ্রিকি আলী’ সিনেমায় কমেডি চরিত্রে অভিনয় করেছি। এমনকি ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’ সিনেমায় আমি অনেক কৌতুক করেছি। শুধুমাত্র তথাকথিত স্থুল কমেডিকে আমি কমেডি বলে বিশ্বাস করিনা। প্রগাঢ় কমেডি বলেও একটা বিষয় আছে। কমেডিরও বিভিন্ন ধারা আছে, যেমন আছে বলিউডের নায়কদের বিভিন্ন ধারা। বলিউডের হিরো বললেই আমি ধরে নেই এমন এক হিরো যে হবে উদার, যে মানুষের সাহাযে এগিয়ে আসবে, প্রত্যেককে সম্মানের চোখে দেখবে এবং তিনি হবেন একজন শুদ্ধচরিত্রের মানুষ। আমি এমন একজন হিরোর কথা ভাবি যিনি হবেন প্রকৃতার্থেই খাঁটি মানুষ।

আপনি যখন প্রথম মুম্বাইতে আসেন, কখনো টেলিভিশনের জন্য চেষ্টা করেছিলেন? অনেক অভিনেতা বলিউডের টার্নিং পয়েন্টের আগে টেলিভিশনে  কাজ করে।

আমি মুম্বাইতে যখন আসি ভাবিনি সিনেমায় অভিনয় করব। আমি জানতাম আমার সেধরণের ব্যক্তিত্ব নেই। এমনকি, আমি টেলিভিশনেও চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কোনো চরিত্র পাইনি। টেলিভিশনের দরজা যখন আমার জন্য বন্ধ হয়ে গেলো তখন সিনেমার জন্য ছুটলাম। কোথাও না কোথাও তো ছুটতেই হবে, তাই না?

‘দক্ষতার চেয়ে আর কিছুই বড় হতে পারে না’

মেথড অ্যাক্টিং এর বস বলা হয়ে থাকে তাঁকে। ছবি: সংগৃহীত

ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য আপনি কতটা লড়াই করেছেন? নাকি এখনো লড়াই করতে হচ্ছে?

আমি এই ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার কোনো স্বপ্নই দেখিনি। আমি খুব আত্ববিশ্বাসী ছিলাম আমার দক্ষতা নিয়ে। কিন্তু আমি কখনো ভাবিনি একদিন আমি সুপারস্টার হবো। একমাত্র অভিনয়টাই আমি জানি। তাই শুধুমাত্র আমি অভিনয়টাই করতে চেয়েছি। আমাকে নিয়ে ক্যামেরায় আলাদা কোনো ইফেক্ট ফেলতে হয়না এই কথা আমি বহুবার শুনেছি। আর একসময় এটাকেই আমি সুযোগ হিসেবে নিলাম। শুধু নিজেকেই বারবার বলেছি, দক্ষতার চেয়ে আর কিছুই বড় হতে পারে না।

Advertisement
Share.

Leave A Reply