fbpx

৫ শর্তে লটারিতে ভর্তি, লাগামহীন অর্থ আদায় বন্ধে ফি নির্ধারণ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

২০২১ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এ বিদ্যালয়গুলোতে পাঁচটি শর্ত মেনে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে ভর্তির কাজটি করা হবে।

আজ শনিবার (১২ ডিসেম্বর) মাউশির পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে আবেদন ফি ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা।

বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো যেসব শর্তে ভর্তির এ কাজটি সম্পন্ন করবেন তা হলো, ফেসবুক লাইভে অথবা অন্য যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লটারির দ্বারা ভর্তি প্রক্রিয়াটি সরাসরি প্রচারের ব্যবস্থা করবে। লটারি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকারের ভর্তি তদারকি ও পরীক্ষণ কমিটি, বিদ্যালয়ের ভর্তি পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক প্রতিনিধি, অভিভাবক প্রতিনিধি, ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করবে। ভর্তি তদারকি ও পরীক্ষণ কমিটিকে লটারির তারিখ সম্পর্কে অবহিত করবে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লটারি কার্যক্রম পরিচালনা করবে। মোট কথা, লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়াটি যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পর এবার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও এ ঘোষণা দেয়া হলো।

এদিকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগামহীন অর্থ আদায় বন্ধে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২০’ প্রণয়ন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যা আগামী বছর থেকে বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপত্বিতে এ নীতিমালা চূড়ান্ত করতে এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নীতিমালার বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক জানান, এটি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীদের সব ধরনের ফি ও বেতনের অর্থ নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আদায় করতে হবে। কোনোভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ আদায় করা যাবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ তহবিলে আদায়কৃত সব অর্থ জমা রাখতে হবে।

তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি হিসেবে আদায়কৃত অর্থ বিভিন্নভাবে আত্মসাতের বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অনেকদিন থেকেই অভিযোগ আসছিল। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে অর্থব্যয়ে কোনো স্বচ্ছতা পাওয়া যায়নি। আর তাই সকল ধরনের আয় ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

এদিকে, নীতিমালায় যে খাতগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো হলো, ঢাকা মেট্রোপলিটন ও তার আশপাশ এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির মাসিক বেতন ২৫ থেকে ৪৫ টাকা, জেলা সদর ও পৌর এলাকায় ২০ থেকে ৪০ টাকা, উপজেলায় ১৫ থেকে ৩৫ টাকা এবং সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ১২ থেকে ৩০ টাকা নির্ধারিত থাকবে। এছাড়া, ভর্তির আবেদন ফি পর্যায়ক্রমে ৭৫ থেকে ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হবে। আর ভর্তি ও পূর্ণ ভর্তি ফি ধার্য থাকবে ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা।

নীতিমালায় ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার ফিও ধার্য করা হয়েছে। তার মধ্যে, ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রাথমিক স্তরে দুই পরীক্ষার জন্য এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা নেয়া যাবে। এছাড়া, ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ ম্যাগাজিন, মুদ্রণ, সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি, রেডক্রিসেন্ট ফি, বিএনসিসি ফি সহ আরো বিভিন্ন খাতে ফি ধার্য করা হয়েছে খুবই পরিমিত হারে।

এদিকে, অষ্টম ও নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি, পরীক্ষার ফি, ব্যবহারিক পত্রের ফি, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ফি, মূল সনদ ফি শিক্ষা বোর্ড থেকে নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া, স্কাউট, ক্রীড়া, কল্যাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফিও বোর্ড থেকে নির্ধারণ করে দেবে। তবে, ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী উন্নয়ন ফি আদায় করা যাবে।

নীতিমালায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, অনলাইন আবেদন, রেজিস্ট্রেশন ফি, উন্নয়ন ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারণ করা থাকবে। অভ্যন্তরীণ ফি ৫০ থেকে ৪০ টাকা আদায় করা হবে প্রতিটি বিষয়ে। তবে কলেজ পর্যায়ের প্রতি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সনদ, পরীক্ষা কেন্দ্র, রোভারস্কাউট, ক্রীড়া, রেডক্রিসেন্ট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি, বিএনসিসি ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী পরিশোধ করতে হবে।

যেহেতু, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের নগদ অর্থ আদায় করতে পারবে না, এজন্য সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংকে হিসাব চালু করতে হবে। এছাড়া, এমপিওভুক্ত স্কুলগুলোতে ম্যানেজিং কমিটি এবং কলেজে গভর্নিং বডির সভাপতির নেতৃত্বে ৩ জন সিনিয়র শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি অর্থ কমিটি গঠন করতে হবে। যাদের কাজ হবে সব ধরনের ফি এবং বেতন আদায় সম্পর্কিত মাসিক প্রতিবেদন কমিটি বরাবর দাখিল করা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply