হাসিভরা মুখে এখনও টলমলে তারুণ্যের উজ্জ্বলতা। ভাল-মন্দের প্রতিটি মুহূর্ত আগলে রেখে জীবনকে যত্ন করে যাপন করছেন রোকেয়া মিনাক্ষী হোসেন।

মিনাক্ষী হোসেনের স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ হননা এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে।
বয়সের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০। দীঘল কালো চুল বদলে গেছে শ্বেত শুভ্রতায়। তবে মনের বয়স এখনো যেন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে ষোড়শীতে। অন্তরে শুধুই সবুজের আনাগোনা।
বন্ধু-সজনতো বটেই, মিনাক্ষী হোসেনের স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ হননা এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। এখনও নিজের কাজ নিজে করতেই ভালবাসেন তিনি। ঘরগোছানো, রান্না-বান্না আর সবচেয়ে বেশি সুন্দর সময় কাটে নাতনী রাইয়ের সাথে। আর দিনমান গুনগুনিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে নিজের সজীবতাকে যেন আরও একটু ঝালিয়ে নেন তিনি।

বড় মেয়ে নৃত্যশিল্পী সামিনা হোসেন প্রেমা ও ছোট মেয়ে কণ্ঠশিল্পী সাজিয়া হোসেন প্রৈতির সাথে মিনাক্ষী হোসেন
মিনাক্ষী হোসেন জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে পড়াশুনা করে নিজের ইচ্ছেতেই শিক্ষকতাকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও ছায়ানটে দ্বিতীয় ব্যাচের রবীন্দ্র সংঙ্গীত শিল্পী ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে শাহাবাগ, যাদুঘরসহ বিভিন্ন স্থানে গান গেয়ে মুক্তিযুদ্ধের গণজাগরণ তৈরি করতে কাজ করেছেন মিনাক্ষী। সন্জীদা খাতুন, আসাদুজ্জামন নূর, মাহমুদুর রহমান বেনুসহ অনেক দেশ বরেণ্য শিল্পী ছিলেন এই দলে। সেসব স্মৃতি এখনও ভীষণ মধুর ও গর্বের বলে জানান তিনি।

তারুণ্যে মিনাক্ষী হোসেন
জীবনের সাত দশক পেরিয়েও চোখে-মুখে এমন লাবণ্য ধরে রাখার শক্তি কোথায় পান?- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ”ছোট বেলা থেকেই ভীষণ ডানপিটে ছিলাম। পারিবারিক ভাবেই সাংস্কৃতিক আবহে বেড়ে উঠেছি। বন্ধু নির্বাচনে ছেলে-মেয়ে নয় বরং ভাল মানুষ খুঁজেছি। আর এখনও বিশ্বাস করি সহজ চিন্তাই সুখ বয়ে আনে। বোধহয় এর প্রভাবেই সুখটাকেই চিনতে শিখেছি। প্রাণবন্ত থাকতে পারছি।”

স্বামী মো. সাখাওয়াত হোসেনের সাথে মিনাক্ষী হোসেন।
মিনাক্ষী হোসেনের স্বামী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের সাবেক শিক্ষক মো. সাখাওয়াত হোসেন। দুজনের মধ্যে রসায়ণ মন ছুঁয়ে যায়। এর রহস্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন ‘ সরলতা দিয়েই সম্পর্ক গড়তে হয়। আমাদেরও তাই। আর কর্তাতো আমাকে মনেই করেন না বয়স বেড়েছে। সব সময় চান যেন সেজেগুজে থাকি। তার এক কথা, আমি যেন সব সময় তরুণী হয়েই থাকি।”