fbpx

সাদের অক্সিজেন, ছুটেন জয় বাংলা বলে

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দায়িত্ব, কর্মব্যস্ততা এই দুইয়ের বাইরে পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ির পানে ছুটে চলেন না এমন খুব কম মানুষ হয়তো খুঁজলে পাওয়া যেতে পারে।

এইসব দায়িত্ব অথবা কর্মব্যস্ততা শুধুই কি চাকরি বা কাজের জন্যই আসে? উত্তর হলো সবসময় তা আসেনা।
মানুষের প্রতি মানুষের যেই দায়িত্ব থাকার কথা, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের যেই কর্মব্যস্ততা থাকার কথা সেই সুন্দর সত্যকেই সবার সামনে তুলে ধরেছেন সাদ বিন কাদের চৌধুরী।

‘জয় বাংলা অক্সিজেন সার্ভিস’-এর প্রধান উদ্যোক্তা সাদ বিন কাদের চৌধুরী করোনা মহামারীর শুরু থেকে রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। স্বশরীরে তো আছেই ভিডিও কলেও কখনো কখনো প্রয়োজনে নির্দেশনা দিচ্ছেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামে খাবার আর পানির কষ্টে নিজেরা দিন কাটালেও যেখানেই অক্সিজেনের অভাবে কাতর কেউ একটি মাত্র ফোন কল করেছেন সেখানেই ছুটে গেছেন সাদ ও তার দল।

সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে জয় বাংলা অক্সিজেন সার্ভিস এর মাধ্যমে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছানো সাদ মাত্র ১২টি সিলিন্ডার দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করেন। সময়ের ব্যবধানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা এখন ১৬০টি। রাজধানীর সাথে সিলেট, চট্টগ্রাম,ফেনী সহ নতুন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে কুপোকাত উত্তরবঙ্গের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী,বগুড়া, সিরাজগঞ্জ সেখানেও পৌঁছেছে জয় বাংলার এই সার্ভিস। শুধু তাই নয় যেখান থেকে যেভাবেই মানুষ অক্সিজেনের আকুতি জানিয়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, বিনা যাতায়াত খরচে, বিনা জামানতে ১০দিন অব্দি সিলিন্ডার এর সুবিধা নিতে পারবে কোভিড আক্রান্ত যে কেউ। প্রয়োজন শুধু ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন। স্বশরীরে ভলান্টিয়াররা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে যাবার সাথে সাথে কুরিয়ার করে সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। বাদ পড়েনি কোভিড আক্রান্তের সংখ্যায় ভারি যশোরের প্রত্যন্ত ইউনিয়নও।

সাদ জানান, ‘জয় বাংলা’ শব্দ দুটির মাধ্যমে যেভাবে একটি স্বাধীন দেশ এখনো আমরা ধারণ করি একিভাবে এই শব্দটি যেনো অসংখ্য মানুষের নিঃশ্বাস নেবার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে।

অসাধু ব্যবসায়ীরা অক্সিজেনের যে কৃত্রিম সংকট বারবার তৈরি করার চেষ্টা করেন ‘অক্সিজেন সিলিন্ডারের মূল্য ও তরল অক্সিজেনের মূল্যমানের নির্ধারিত তালিকা থাকলে অক্সিজেন সার্ভিস দেয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যাই সমাধান হয়ে যায়। এই বিষয়ে গণমাধ্যেমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সাদ বিন কাদের চৌধুরী।

বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের বিল পরিশোধ করতে গেলেই বোঝা যায় বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা প্রাপ্তি এই মহামারীতে সোনার হরিণ পাবার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।

সাদের অক্সিজেন, ছুটেন জয় বাংলা বলে

করোনাকালীন সেবা শেষে সাদ বৃদ্ধাশ্রম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মাধ্যেমে তাই এই অক্সিজেন সেবা চালু রাখতে চান।

আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত যেকোনো ঝামেলা থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতে অক্সিজেন সিলিন্ডার, তরল অক্সিজেন রিফিল এইসব সুবিধা নেয়াতেই আগ্রহী সাদ। ‘হ্যাঁ আমিই ছাত্রলীগ’ ট্যাগলাইন দিয়ে এগিয়ে যেতে চান সাদ। সংগঠন নিয়ে বিতর্ক থাকবেই কিন্তু যেই সংগঠন সাদকে এতো বড় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে দিবানিশি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, সাহায্য করেছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই সাদের। তিনি মনে করেন, সংগঠনের জন্যেই সাদ এতো দূর আসতে পেরেছেন, তার সংগঠন ছাত্রলীগ ছাড়া তিনি কেউ নন।

রাজধানীর জিগাতলায় নিজেদের অর্থায়ানে ছোট্ট যে ফ্ল্যাটে থেকে সাদ ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবীরা কখনো কোভিড আক্রান্ত হয়ে,কখনো পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ত্যাগ করে সারাদেশ ব্যাপী অক্সিজেন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি রইলো টুপি খোলা সম্মান।

একি সাথে জরুরি ভিত্তিতে যে কারোর অক্সিজেন প্রয়োজন হলেই যোগাযোগ করতে পারেন- ০১৯১১৮২১৮৮৪- জয় বাংলা অক্সিজেন সার্ভিস

লেখক
অন্তরা শারমিন, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Advertisement
Share.

Leave A Reply