fbpx

অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয় নি ৫৭ শতাংশ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সচল রাখতে করোনাকালীন অনলাইন ক্লাস চালু করলেও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ তুলনামূলক কম ছিল বলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।

সেখানে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক স্কুলগুলোর ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয়নি। আর ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসে আগ্রহ দেখায় নি।

দেশের শিক্ষা প্রশাসনের আটটি আঞ্চলিক (মোট অঞ্চল নয়টি) কার্যালয়ের মাধ্যম গত আগস্ট মাসে ৩ হাজার ৫৭টি বিদ্যালয় তদারক করে প্রতিবেদনটি তৈরি করে। সারা দেশে মাধ্যমিক স্কুল আছে ১৮ হাজারের বেশি। যেখানে মোট শিক্ষার্থী এক কোটির বেশি।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অনলাইন শিক্ষার জন্য যে উপকরণের প্রয়োজন, তা সব শিক্ষার্থীর কাছে সমানভাবে নেই। আর যেসব এলাকা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে আছে, সেসব এলাকার শিক্ষার্থীদের কাছে এসব উপকরণের অভাব আছে। এছাড়া ইন্টারনেটের কম গতি ও কারিগরি জটিলতাও শিক্ষার্থীদের ক্লাসে কম অংশগ্রহণের একটি কারণ।

২০২০ সালের ২৯ মার্চ প্রথমে মাউশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ শিরোনামে সংসদ টেলিভিশনে পাঠদান সম্প্রচার শুরু করে। এরপর সারাদেশে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়।

এ সময়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম কেমন চলছে, তা জানতে তদারক কার্যক্রম চালায় মাউশি। তদারকের আওতায় আসা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৯১ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে খুলনা ও কুমিল্লা অঞ্চলে তদারক করা শতভাগ স্কুল অনলাইন ক্লাস চালু করে।

শ্রেণি শিক্ষকদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে প্রধান শিক্ষকেরা অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির তথ্য সংরক্ষণ করেন। উপস্থিতির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে উপস্থিত ছিল। অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম গ্রহণ করেনি এমন বিদ্যালয় ছিল দুই শতাধিক, যার মধ্যে ১৭৯টি এমপিওভুক্ত। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী তাঁদের মূল বেতনের পুরোটাই সরকার থেকে পান। ২৯ শতাংশ বিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাসের শিক্ষার্থীর উপস্থিতির তথ্য সংরক্ষণ করা হয়নি।

তদারকি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, করোনাকালে সময়সূচি মেনে ক্লাস নিয়েছে ৮১ শতাংশ বিদ্যালয়। অনলাইনে মোট ৭০ হাজার ১৪২টি ক্লাস হয়। এর মধ্যে মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে ক্লাস নেওয়া হয় ২১ হাজার ৯০৪টি। ব্ল্যাকবোর্ড বা হোয়াইট বোর্ড ব্যবহার করে ৪২ হাজারের বেশি ক্লাস নেওয়া হয়। আর ‘শিক্ষক বাতায়ন’–এর ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করে ক্লাস নেওয়া হয় ১০ হাজারের বেশি। অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ফেসবুক লাইভ ও জুম। এ ছাড়া ইউটিউব, গুগল মিট, মেসেঞ্জার, স্কাইপসহ অন্যান্য মাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছে।

গত বছরের জানুয়ারিতে করোনাকালে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ‘এডুকেশন ওয়াচ’ নামে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল গণসাক্ষরতা অভিযান। সেখানে দেখা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৬৯ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী অনলাইন, টেলিভিশনের মতো মাধ্যমে দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেয়নি।

গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক কে এম এনামুল হক বলেন, মফস্বল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় অনলাইন ক্লাসের উদ্দেশ্য অনেকটাই ব্যাহত হয়। অনলাইন ক্লাসকে সচল রাখতে হলে সব শিক্ষার্থীর জন্য স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply