ডে-কেয়ার বা শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্যতামূলক সরকারি অনুমোদন ও সনদ নিতে হবে –এ সংক্রান্ত একটি খসড়া আইন করে তার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় সংসদ।
আজ বুধবার (১৬ জুন) এ সংক্রান্ত ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বিল-২০২১’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। পরে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়।
বিলে বলা হয়েছে, নতুন এই আইন অনুযায়ী নিবন্ধন ছাড়া কেউ ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র’ চালালে, সেক্ষেত্রে দুই বছরের কারাদণ্ড ও দশ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া, সেখান থেকে কোনো শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এসব কেন্দ্রে সংক্রামক রোগের বিস্তার ঘটাতে সহায়তা করলে বা তথ্য গোপন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা হবে বলেও উল্লেখ করা রয়েছে নতুন এ আইনে।
বিলে আরও বলা হয়েছে, শিশু বা ক্ষেত্রমতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর প্রয়োজনীয় সেবা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদন, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও শিশুর জন্য অনুকূল পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। আর প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার করে শিশুদের অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময় করতে হবে।
বিলটি পাসের আগে এর উপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা গত ৩ এপ্রিল সংসদে উত্থাপন করেন বিলটি। পরে তা পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পাঠানো হয় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে।
এ আইন প্রবর্তন হলে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজ ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত শ্রেণির কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার পাশাপাশি আইনের অধীনে নিবন্ধন সনদ নিয়ে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র’ পরিচালনা করতে পারবে। এছাড়া, যেসব ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র’ বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে, নতুন আইন পাস হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সেগুলোকে নিবন্ধন করে নিতে হবে। তখন এই সবগুলো কেন্দ্র মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় চলে আসবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র’ আছে ১১৯টি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় আছে ২০টি।