অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম রোধ করতে আজ জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১’। মূলত, কোনো হজ ও ওমরা এজেন্সি যদি সৌদি আরবে গিয়ে অপরাধ করে, তাহলে বাংলাদেশে সেই অপরাধের বিচার করার বিধান রেখেই নতুন আইনের খসড়ায় এ অনুমোদন দিয়েছে সংসদ।
আজ মঙ্গলবার (১৫ জুন) ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কোন সংবিধিবদ্ধ আইন নেই। নির্বাহী আদেশ, নীতিমালা, পরিপত্র ইত্যাদি দিয়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সংবিধিবদ্ধ আইন ও বিধি-বিধানের প্রয়োজন দীর্ঘদিন ধরে অনুভূত হচ্ছে’।
এর আগে, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন।
জানা গেছে, কোনো ধরনের অনিয়মের কারণে হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে গেলে তা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে এজেন্সিগুলো। আর তাই হজ পরিচালনার জন্য একটি আইনি কাঠামোর প্রয়োজন ছিল।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই ধর্মপ্রতিমন্ত্রী বিলটি সংসদে তোলেন গত ৪ এপ্রিল। পরে তা পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়েছে, হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন করবে। হজ ও ওমরাহ এজেন্সিকে শর্ত মেনে নিবন্ধন নিতে হবে।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনের আওতায় নিবন্ধন না থাকলে কেউ হজযাত্রীদের হজের জন্য নিয়ে যেতে পারবেন না এবং নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। আর নিবন্ধন পেতে হলে হজ এজেন্সিকে তিন বছর এবং ওমরাহ এজেন্সিকে দুই বছরের ট্র্যাভেল এজেন্সি পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
তাছাড়া, হজের চুক্তি দেশে হওয়ার পরে কেউ সৌদিতে গিয়ে ঠকালে তবে ওই অপরাধ ‘বাংলাদেশে হয়েছে’ বলে গণ্য করে এই আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে।
বিল অনুযায়ী, অনিয়ম প্রমাণিত হলে হজ এজেন্সির নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আর ওমরা এজেন্সি অনিয়ম করলে তারা নিবন্ধন হারানোর সাথে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়বে। এছাড়া জামানত বাজেয়াপ্ত, নিবন্ধন স্থগিত, সতর্কীকরণ ও তিরস্কারের শাস্তিও রয়েছে।
বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো এজেন্সি পরপর দুইবার তিরস্কৃত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার নিবন্ধন দুই বছরের জন্য স্থগিত হয়ে যাবে। এর সাথে, কোন এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল হলে ওই এজেন্সির অংশীদার বা স্বত্বাধিকারীরা পরে কখনও হজ বা ওমরা এজেন্সির নিবন্ধন পাবেন না। অন্য কোনো এজেন্সির কাজেও সম্পৃক্ত হতে পারবেন না তারা। এছাড়া, হজ এজেন্সিগুলো স্বত্ত্ব পরিবর্তন করতে চাইলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে বলেও বিলে বলা হয়েছে।